ইউরোপ মহাদেশের লন্ডন অববাহিকা সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী।

ইউরোপ মহাদেশের লন্ডন অববাহিকা সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
ইউরোপ মহাদেশের লন্ডন অববাহিকা


লন্ডন অববাহিকার অবস্থান ও সীমানা লেখ।

অবস্থান:

ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী লন্ডন শহর। টেমস নদীর তীরে অবস্থিত লন্ডন ও তার চারপাশের অঞ্চল নিয়ে লন্ডন অববাহিকা গঠিত।

সীমানা:

লন্ডন অববাহিকার উত্তরে চিলটার্ন উচ্চভূমি, দক্ষিণে নর্থ ডাউনস উচ্চভূমি, পশ্চিমে রেডিং শহর এবং পূর্বে উত্তর সাগর।

লন্ডন অববাহিকার আয়তন কত?

লন্ডন অববাহিকার আয়তন প্রায় 7760 বর্গ কিলোমিটার।

লন্ডন অববাহিকার আকৃতি কেমন?

লন্ডন অববাহিকার আকৃতি সড়ার মতো।

এখানকার প্রধান নদী কোনটি?

এখানকার প্রধান নদী টেমস।

এখানকার প্রধান বিমান বন্দর কোনটি?

এখানকার প্রধান বিমান বন্দর হল হিথরো।

লন্ডন অববাহিকার প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পর্কে আলোচনা কর।

1. ভূ-প্রকৃতি:

             লন্ডন অববাহিকা অঞ্চলের প্রায় মাঝখান দিয়ে পশ্চিম থেকে পূর্বে টেমস নদী বয়ে চলেছে। টেমস নদীর মোহনার কাছিকাছি বা লন্ডন অববাহিকার পূর্বদিকে বিশেষ কোনো উচ্চভূমি দেখা যায় না। তবে উৎস অঞ্চলে, বিশেষত উত্তর, পশ্চিম এবং দক্ষিণ দিকে চিলটার্ন, হোয়াইট হর্স ও নর্থ ডাউনস নামে তিনটি উচ্চভূমি লক্ষ করা যায়। অতীতে এই উচ্চভূমি অঞ্চলের মাঝখানের অংশ বসে গিয়ে এই নিম্নভূমির সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীকালে টেমস ও তার বিভিন্ন উপনদীর সঞ্চয়কার্যের ফলে এই লন্ডন অববাহিকা অঞ্চলের উদ্ভব হয়েছে।

2. নদনদী:

           লন্ডন অববাহিকার প্রধান নদী টেমস। এটি 300 কিমি দীর্ঘ। টেমস নদী পশ্চিমে কটসওল্ডস পাহাড়ে উৎপন্ন হয়ে হোয়াইট হর্স ও চিলটার্ন পর্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লন্ডন অববাহিকায় প্রবেশ করেছে। তবে লন্ডন অববাহিকায় প্রবেশ করার আগে টেমস বোনেট ও লী নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই দুটি নদীর মিলিত ধারা পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে ডোভার প্রণালীতে পড়েছে। টেমস নদী চিলটার্ন পাহাড়ে গোরিং নামে গভীর গিরিখাত সৃষ্টি করেছে। টেমস নদী সুনাব্য থাকায় সারা বছর জাহাজ চলাচল করতে পারে।

3. জলবায়ু:

           লন্ডন মানে সারাবছর মেঘলা আকাশ, ঝিরঝিরে বৃষ্টি, শীতল ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া। পাশের সমুদ্র থেকে প্রবাহিত উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে শীতকালীন উষ্ণতা খুব কমে না। পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে এখানে সারাবছরই বৃষ্টিপাত হয়, যদিও পরিমাণে কম।

4. স্বাভাবিক উদ্ভিদ:

             লন্ডন অববাহিকার প্রান্ত দেশের উচ্চভূমি এবং চিলটার্ন পর্বতের পাদদেশে পর্ণমোচী ও সরলবর্গীয় অরণ্য দেখা যায়। যেমন – ওক, বীচ, পাইন, বার্চ, অ্যাশ, ফার, লক প্রভৃতি। লন্ডন অববাহিকায় ঘন জনবসতি, শহরায়ন ও শিল্পায়নের জন্য এখানে বনভূমির পরিমাণ কম।

লন্ডন অববাহিকার কৃষিকাজ সম্পর্কে আলোচনা কর।

           বসতি ও শিল্পের প্রয়োজনে লন্ডন অববাহিকার বেশিরভাগ জমি ব্যবহৃত হয়। তবু স্থানীয় চাহিদা মেটানোর জন্য এখানে কিছু কিছু অঞ্চলে উন্নত যান্ত্রিক পদ্ধতিতে মিশ্র কৃষির মাধ্যমে কৃষিকাজ করা হয়ে থাকে। এখানকার কৃষির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল প্রচুর পরিমাণে সবজি চাষ। বিপুল শহরবাসীর খাদ্যের চাহিদা মেটানোর জন্য ছোটো ছোটো খামারে ফল ও শাকসবজি উৎপাদন করে ট্রাকে করে শহরে পাঠানো হয়। একে ট্রাক ফার্মিং বলে।

              নদী উপত্যকায় গম, যব, ভূট্টা আর চিলটার্ন ও ডাউনসের উচ্চভূমিতে মিশ্র কৃষি পদ্ধতিতে ওরচ ও আলুর সঙ্গে পশুখাদ্য হিসেবে হে, ক্লোভার ঘাসের চাষ করা হয়। পাশাপাশি উত্তর সাগর থেকে প্রচুর মাছও ধরা হয়।

এখানকার একটি পুনঃরপ্তানি বন্দরের নাম লেখ।

টেমস নদীর খাঁড়ি মুখে অবস্থিত লন্ডন এখানকার বৃহত্তম পুনঃরপ্তানি বন্দর।

লন্ডন অববাহিকার শিল্প ও শিল্পকেন্দ্র গুলির নাম লেখ।

লন্ডন অববাহিকার শিল্প ও শিল্পকেন্দ্র গুলির নাম নীচে আলোচনা করা হল – 

  • ইঞ্জিনিয়ারিং – গিলফোর্ড
  • মোটরগাড়ি নির্মাণ – লুটন, অক্সফোর্ড
  • জাহাজ মেরামতি – চ্যাথাম
  • বিমান ও বিমান যন্ত্রাংশ – রিডিং, হ্যামেল হ্যাম্পস্টেড
  • বৈদ্যুতিক ও কৃষিমন্ত্রী – রেডিং, নিউব্যারি
  • ছাপাখানা বা মুদ্রণ – ওয়াচফোর্ড
  • কাগজ – পারফ্লিক্ট, নর্থফ্লিক্ট, ডার্টফোর্ড
  • রাসায়নিক, দেশলাই – লন্ডন
  • তথ্যপ্রযুক্তি, বিস্কুট – রেডিং
  • ডেয়ারি ও ময়দা – লিচেস্টার, এসেক্স

This post was updated on 2023-02-22 17:57:45.

Leave a Comment

error: Content is protected !!