ইক্ষু উৎপাদনে অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।

 ইক্ষু উৎপাদনে অনুকূল ভৌগলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।

ভূমিকা:

       ইক্ষু ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চল এর ফসল। উত্তর ভারত ,দক্ষিণ ভারত ও মধ্য ভারতে ইক্ষু উৎপাদন ভালো হয়। ইক্ষুর রস থেকে চিনি প্রস্তুত করা হয়। ইক্ষু উৎপাদনে অনুকূল ভৌগলিক পরিবেশগুলি নিম্নরূপ-

  • অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ:

  1. উষ্ণতা:

                  বার্ষিক 21 ডিগ্রি থেকে 27 ডিগ্রি গড় উষ্ণতা আখের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও ফলনে সহায়ক। অধিক উষ্ণতা (50 ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি) বা শৈত্য ( 20 ডিগ্রী সেলসিয়াস অপেক্ষা কম), কুয়াশা বা তুহিন আখ চাষের পক্ষে ক্ষতিকারক। ফসল সংগ্রহের সময় রোদ ঝলমলে শুষ্ক আবহাওয়া প্রয়োজন।

       2. বৃষ্টিপাত:

                      বার্ষিক 75 থেকে 100 সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে আখ চাষ করা হয়।তবে বৃষ্টিপাত 75 সেন্টিমিটার এর কম হলে জল সেচের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ মধ্যম ও অনিশ্চিত বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে জলসেচের সুবিধা ছাড়া আখের ফলন সম্ভব নয়। বিপরীতভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত যুক্ত অঞ্চলে মাটিতে অতিরিক্ত জলের জন্য আখের মধ্যে শর্করার পরিমাণ কমে যায়।

      3. মৃত্তিকা:

                    জল নিকাশি বন্দোবস্ত যুক্ত উর্বর মাটি, যেমন-কৃষ্ণ মৃত্তিকা, দোআঁশ,পলি মাটি ইত্যাদি আখ চাষের উপযোগী। ক্ষারীয় মাটিতেও আখ জন্মায়।

      4. ভূমির প্রকৃতি:

                          লাভজনক ভাবে আখ চাষ করার জন্য সুষম জল ধারণ ক্ষমতা যুক্ত চুন ও লবণসমৃদ্ধ মাটি নির্ধারণ করা দরকার।অনুচ্চ ঢালু জমি বা সমতল ভূমি বৃহদায়তন আখ চাষে সহায়ক।

  • অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশ:

      1. শ্রমিক:

                   আখ অত্যন্ত নিবিড় কৃষি। জমি তৈরি, বীজ বপন, আগাছা পরিষ্কার করা,সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা, বাজারে নিয়ে যাওয়া প্রভৃতি কাজে নিপুন এবং সুলভ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।সেজন্য জনবহুল অঞ্চলে ইক্ষু চাষ করা হয়।

      2. আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি:

                                   অধিক ফলন পেতে হলে উন্নত আখবীজ ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। রোগ ও পোকার উপদ্রব থেকে আখ গাছ কে বাঁচানোর জন্য নিয়মিত প্রয়োজন অনুযায়ী কীটনাশক ব্যবহার করা প্রয়োজন।

      3. পরিবহনের সুবিধা:

                           ইক্ষু যেহেতু বাজার ভিত্তিক বাণিজ্যিক ফসল এজন্য ক্ষেত থেকে চিনিকল এবং চিনিকল থেকে বাজারজাত করণের জন্য উন্নত পরিবহন সুবিধা থাকা আবশ্যক। আখ কাটার 24 ঘণ্টার মধ্যে তা থেকে রস বের করে না নিলে ইক্ষুর রসের পরিমাণ ও মিষ্টত্ব কমতে থাকে।এই কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিনিকলগুলো ইক্ষু চাষের জমির নিকটবর্তী স্থানে গড়ে ওঠে।

       4. মূলধন:

        ইক্ষু জমিবর উর্বরতা দ্রুত নষ্ট করে দেয়। তাই প্রচুর সার প্রয়োগ করতে হয়।এছাড়া কীটনাশক প্রয়োগ, জলসেচ করা, শ্রমিক নিয়োগ এসবের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়।

আখ উৎপাদনে ভারতের কোন রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে?

আখ উৎপাদনে উত্তরপ্রদেশ ভারতের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

আখ উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান কত?

আখ উৎপাদনে পৃথিবীতে ভারতের স্থান দ্বিতীয়।

ভারতের আখ গবেষণাগার কোথায় অবস্থিত?

ভারতের আখ গবেষণাগার লখনউ অবস্থিত।

Leave a Comment

error: Content is protected !!