এশিয়ার নদ-নদী সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী।

এশিয়ার নদ-নদী সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।

Read-এশিয়া মহাদেশের জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী।

ভূমিকা:

এশিয়া মহাদেশের নদ-নদী মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত। যথা – 

  • উত্তর দিকে প্রবাহিত নদী
  • দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত নদী
  • পূর্ব দিকে প্রবাহিত নদী

নিম্ন এই তিনদিকে প্রবাহিত নদীগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল –

1. উত্তর দিকে প্রবাহিত নদী:

ওব নদী: 

  • নদীর উৎস: আলতাই পর্বত। 
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 3650 কিমি।  
  • মোহনা: ওব সাগর।

ইনিসি নদী:

  • নদীর উৎস: সায়ান পর্বত।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 5540 কিমি।         
  • মোহনা: ইনিসি উপসাগর।

লেনা নদী:       

  • নদীর উৎস: বৈকাল পর্বত।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 4270 কিমি।
  • মোহনা: ল্যাপ্টেভিক উপসাগর।

নদীর বৈশিষ্ট্য:

  1. এই নদীগুলির মোহনা উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত। তাই বছরের 8-9 মাস বরফে ঢাকা থাকে। শরৎ ও বসন্ত কালে বেশি বৃষ্টিপাত হলে, ঐ জল নদীর মোহনার বরফে বাধা পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়।
  2. নদীগুলি যাতায়াতের অনুপযোগী।
  3. নদী উপত্যকা জনবিরল।
  4. নদী অববাহিকায় একাধিক জলাভূমি দেখা যায়।

2. দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত নদী:

গঙ্গা নদী:

  • নদীর উৎস: গঙ্গোত্রী হিমবাহ।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 2510 কিমি।
  • মোহনা: বঙ্গোপসাগর।

ব্রহ্মপুত্র নদী:

  • নদীর উৎস: তিব্বতের মানস সরোবরের কাছে চেমায়ুং দুং হিমবাহ।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 2580 কিমি।
  • মোহনা: বঙ্গোপসাগর।

সিন্ধু নদী:

  • নদীর উৎস: তিব্বতের মানস সরোবর।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 2880 কিমি।
  • মোহনা: আরব সাগর।

মেকং নদী:

  • নদীর উৎস: কুয়েনলুন পর্বত।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 4350 কিমি।
  • মোহনা: দক্ষিণ চিনসাগর।

মেনাম নদী:

  • নদীর উৎস: শান মালভূমি।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 365 কিমি।
  • মোহনা: শ্যামসাগর।

ইরাবতী নদী:

  • নদীর উৎস: ইউনান মালভূমি।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 2090 কিমি।
  • মোহনা: মার্তাবান উপসাগর।

টাইগ্ৰিস ও ইউফ্রেটিস নদী:

  • নদীর উৎস: আর্মেনীয় মালভূমির কুর্দিস্তান পর্বত।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: টাইগ্ৰিস 1850 কিমি, ইউফ্রেটিস 2800 কিমি।
  • মোহনা: পারস্য উপসাগর।

✓ টাইগ্ৰিস ও ইউফ্রেটিস নদীর মিলিত প্রবাহের নাম সাত-এল-আরব।

নদীর বৈশিষ্ট্য:

  1. নদীগুলি মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত ও পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হওয়ার জন্য বৃষ্টির জল ও বরফগলা জলে পুষ্ট।
  2. নদীর নিম্ন গতিতে বর্ষাকালে বন্যা দেখা যায়।
  3. অধিকাংশ নদীগুলির অববাহিকা অঞ্চল ঘনজবসতিপূর্ণ।
  4. নদীগুলি পরিবহন ও সেচের কাজে বিশেষ উপযোগী।

3. পূর্ব দিকে প্রবাহিত নদী:

ইয়াংসি নদী:

  • নদীর উৎস: কুয়েনলুন পর্বতের দক্ষিণে গোলাডানডং পর্বতশৃঙ্গ।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 5530 কিমি।
  • মোহনা: চিন সাগর।

সিকিয়াং নদী:

  • নদীর উৎস: ইউনান মালভূমির বায়ানহারা পর্বত।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 1920 কিমি।
  • মোহনা: চিন সাগর।

হোয়াং হো নদী:

  • নদীর উৎস: কুয়েনলুন পর্বত।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 5460 কিমি।
  • মোহনা: পোহাই উপসাগর।

আমুর নদী:

  • নদীর উৎস: রাশিয়ার ইয়াব্লোনয় পর্বত।
  • নদীর দৈর্ঘ্য: 4440 কিমি।
  • মোহনা: ওখটস্ক সাগর।

নদীর বৈশিষ্ট্য:

  1. নদী অববাহিকা ঘনবসতিপূর্ণ।
  2. নদীগুলি নিম্নপ্রবাহে পলি সঞ্চয় করে সমভূমি গড়ে তুলেছে। ফলে এখানে কৃষি ও শিল্পে উন্নতি ঘটেছে।
  3. ইয়াংসি নদীকে স্বর্ণ রেণুর নদী বলে।
  4. হোয়াং হো নদী হলুদ রং এর পলিযুক্ত জল বহন করে বলে একে পীত নদী বলে।

This post was updated on 2023-02-22 17:57:31.

Leave a Comment

error: Content is protected !!