ওশিয়ানিয়া মহাদেশের ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্য লেখ।

ওশিয়ানিয়া মহাদেশের ভূপ্রাকৃতিক বৈচিত্র্য এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো। তোমাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারো।

geographical-diversity-continent-Oceania-class-8

Read- ওশিয়ানিয়া মহাদেশের জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী।

ভূমিকা:

ভূ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে অস্ট্রেলিয়া কে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা যায়। যথা –

  1. পূর্বের উচ্চভূমি
  2. পশ্চিমের মালভূমি
  3. মধ্যভাগের সমভূমি
  4. উপকূলের সমভূমি

1. পূর্বের উচ্চভূমি:

            সমগ্র অস্ট্রেলিয়ার পূর্বভাগ জুড়ে  রয়েছে একটি প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণী। এর নাম গ্রেড ডিভাইডিং রেঞ্জ (দৈর্ঘ্য 3500 কিলোমিটার এবং উচ্চতা গড়ে 1000 থেকে 1500 মিটার), যা উত্তরে ইয়র্ক অন্তরীপ থেকে দক্ষিণে বাস প্রণালী পর্যন্ত বিস্তৃত।

এই পর্বতমালা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিত। উত্তর পূর্বাংশে কুইসল্যান্ড রাজ্যে এর নাম ডার্লিং ডাউন্স, মধ্যভাগের নিউ সাউথ ওয়েলসে এর নাম নিউ ইংল্যান্ড রেঞ্জ, লিভারপুল রেঞ্জ এবং ব্লু রেঞ্জ এবং দক্ষিণ পূর্বের ভিক্টোরিয়াতে নাম অস্ট্রেলিয়ান আলপ্স। এর মধ্যে নিউ ইংল্যান্ড রেঞ্জের মাউন্ট কোসিয়াস্ক (2228 মিটার) সমগ্র অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

2. পশ্চিমের মালভূমি:

             অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমে অর্ধেকের বেশি অংশ জুড়ে উঁচু-নিচু ঢেউ খেলানো মালভূমি দেখা যায়। এখানকার গড় উচ্চতা 250 থেকে ৫০০ মিটার। অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ জায়গা নিয়ে গঠিত এই মালভূমি অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষশুক্ষ এর ফলে এখানে বেশ কয়েকটি মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে। যেমন – গ্ৰেট স্যান্ডি, ভিক্টোরিয়া, গিবসন প্রভৃতি। মরুভূমির মধ্যে মাঝে মাঝে লবণাক্ত জলের হ্রদ (প্লায়া) ও মরুদ্যান দেখা যায়।

     ✓ লাল বেলেপাথর শিলায় গঠিত আয়ার রক অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের একটি দর্শনীয় বস্তু। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত দিনের বিভিন্ন সময় এর রং পরিবর্তন হয়। কখনো এটাকে লালচে বাদামি কখনো হলদে কখনো বা হালকা বেগুনি দেখতে লাগে।

3. মধ্যভাগের সমভূমি:

              পূর্বে গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ এবং পশ্চিম দিকে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মালভূমির মধ্যবর্তী সমতল ভূমির নাম মধ্যভাগের সমভূমি। যার গড় উচ্চতা 180 মিটারের মধ্যে। গ্রে আর সেলউইন নামে দুটি উচ্চভূমি এই সমতলভূমিকে তিন ভাগে ভাগ করেছে।

 দক্ষিণে রয়েছে  মারে ডার্লিং নদীর অববাহিকা বা রিভোরিনার সমভূমি, মাঝে আয়ার হ্রদের সমভূমি আর উত্তরে কার্পেন্টারিয়া নিম্নভূমি। কার্পেন্টারিয়া নিম্নভূমি অঞ্চলে শিলাস্তরের আকৃতি এমনই (গামলার মতো) যে কুপ খুঁড়লে মাটির নিচের জল পাম্পের সাহায্য ছাড়াই বেরিয়ে আসে। এই ধরনের কূপকে আর্টেজীয় কূপ বলে। কার্পেন্টারিয়া সমভূমি পৃথিবীর বৃহত্তম আর্টেজীও কূপ অঞ্চল।

4. উপকূলের সমভূমি:

                অস্ট্রেলিয়ার চারপাশের উপকূলে সমভূমি রয়েছে, তবে বেশিরভাগ সমভূমি খুব সংকীর্ণ। এদের মধ্যে উত্তরে কার্পেন্টারিয়া উপসাগর সংলগ্ন সমভূমি ও দক্ষিণে গ্রেট অস্ট্রেলিয়ান বাইটের উপকূলের সমভূমি বেশ প্রশস্ত।

 অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূল বরাবর সমুদ্রের মধ্যে সমান্তরালভাবে অবস্থান করছে পৃথিবীর বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ।

Read- ওশিয়ানিয়া মহাদেশের মারে-ডার্লিং অববাহিকা সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী।

Leave a Comment

error: Content is protected !!