নীহারিকা কি?
নীহারিকা হলো মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময় যে অসংখ্য ধূলিকণা ও গ্যাস সৃষ্টি হয় সেগুলিকে জমাট বেঁধে তৈরি হয় নীহারিকা। এই নীহারিকা থেকেই সকল রকম নক্ষত্রদের জন্ম হয়। নিহারিকা তে যে সকল ধূলিকণা এবং গ্যাসীয় পদার্থ থাকে তাদের ভিতর ঘর্ষণের ফলে তৈরি হয় জ্বলন্ত একটি নক্ষত্র। আকাশে দেখা সূর্য হল নীহারিকা থেকে তৈরি হয় একটি নক্ষত্র।
ছায়াপথ কাকে বলে?
ছায়াপথ বলতে বোঝা যায়, যখন অনেকগুলি নক্ষত্র একই জায়গায় অবস্থান করে বা অনেকগুলো নক্ষত্র কে নিয়েই তৈরি হয় একটি ছায়াপথ। এই ছায়াপথ দেখতে অনেকটা ডিমের আকৃতি হয়। আমাদের সবচেয়ে কাছের গ্রহ সূর্য এবং যতগুলো নক্ষত্র দেখা যায় এইসব নক্ষত্র হলো আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অন্তর্গত।
নক্ষত্র কি?
রাতের আকাশে যে সকল বস্তু মিটমিট করে জ্বলে তাদের বলা হয় নক্ষত্র। নক্ষত্র তৈরি হয় মহাকাশে ভাসমান অনেক রকম গ্যাসীয় পদার্থ দিয়ে। সূর্য হলো আমাদের একটি কাছের নক্ষত্র। নক্ষত্র কে আর এক কথায় তারা বলা হয়।
পড়ো –
তারার রং কিভাবে সৃষ্টি হয়?
যেসকল নক্ষত্র বা তারা যত বেশি উত্তপ্ত গরম থাকে তার রঙ ততটা লাল হতে শুরু করে। আকাশে যে সকল নীল নক্ষত্র দেখা যায় তার উষ্ণতা লাল রংয়ের তারা থেকেও অনেক বেশি হয়। কারণ কোন জিনিস অতিরিক্ত জল আর পরে যে আভা দেখা যায় তার রং হল নীল সেই কারণে নীল রঙের তারা সবচেয়ে বেশি গরম এবং উত্তপ্ত হয়। এভাবেই তারার রং সৃষ্টি হয়।
তারারা আমাদের থেকে কত দূরে আছে?
আমাদের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র সূর্য মাত্র 15 কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। সূর্যের পরেই আসে প্রক্সিমা সেন্টারাই যেটি 41 লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় লাগে 8 মিনিট 19 সেকেন্ড এর কাছাকাছি। তারারা আমাদের থেকে অনেক আলোকবর্ষ দূরে আছে। কারণ সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র আমাদের থেকে 15 কোটি কিলোমিটার দূরে আছে।
আলোকবর্ষ বলতে কী বোঝায়?
যখন কোন নক্ষত্র বা তারা আমাদের থেকে অনেকটা দূরে অবস্থান করে তখন আমরা সেই দূরত্বকে আলোকবর্ষ তে ধরি। শুধুমাত্র কিলোমিটার দিয়ে তারাদের দূরত্ব মাপা সম্ভব নয় সেই জন্য তারাদের থেকে আমাদের দূরত্ব আলোকবর্ষ দিয়ে মাপা হয়। আলোকবর্ষ বলতে বোঝায় আলোর গতিতে ছুটে যাওয়া সময়। 1 সেকেন্ডে আলোর গতি বেগে যায় সেটি হল আলোকবর্ষ মাপার উপায়। আলো এক সেকেন্ডে 300000 কিলোমিটার যায়।
নক্ষত্রমন্ডল বলতে কী বোঝায়?
যখন অনেকগুলি নক্ষত্র এক জায়গায় উপস্থিত হয় এবং একটি কাল্পনিক দৃশ্য তৈরি করে তখন তাকে আমরা নক্ষত্র মন্ডল বলি। রাতের আকাশে অনেক রকম নক্ষত্রমন্ডল দেখা যায় এবং সে গুলোকে আমরা বিভিন্ন নামে নামকরণ করি।
যেমন – কালপুরুষ, সপ্তর্ষিমণ্ডল, বক মণ্ডল ইত্যাদি।
টেলিস্কোপ বা দূরবীন কি?
টেলিস্কোপ বা দূরবীন আবিষ্কার করেন গ্যালিলিও। তিনি একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। এই টেলিস্কোপ বা দূরবীন দিয়ে রাতের আকাশের নক্ষত্র গুলো খুব সহজে দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা এই টেলিস্কোপ দিয়ে রাতের আকাশের নক্ষত্রের পড়াশোনা করে থাকেন।
দিনের আলোয় তারা দেখা যায় না?
দিনের আলোয় তারা না দেখার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। সাধারণত তারা আমাদের থেকে অনেক আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করে। ফলে আমাদের সবচেয়ে কাছের তারা বা নক্ষত্র সূর্য তার আলো দিয়ে বাকি তারাদের আলোকে ঢেকে ফেলে। এর ফলে দূরে যত নক্ষত্র রাতের আকাশে দেখতে পাওয়া যায় সেই সকল নক্ষত্রের আলো দিনের বেলা আমাদের চোখে পড়ে না। সূর্য দূরের সকল নক্ষত্রের আলোকে হার মানিয়ে দেয় নিজের আলো দিয়ে।
রাতের আকাশে তারাগুলো মিটমিট করে কেন?
তারারা প্রকৃতপক্ষে কখনোই মিটমিট করে জ্বলে না। তাদের আলোর সর্বদাই স্থির থাকে। কিন্তু যখন মহাজগতের বিভিন্ন বায়ুমণ্ডলের পর্দা ভেদ করে নক্ষত্রদের আলো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায় তখন সেটিকে জ্বলতে এবং নিভতে দেখা যায়। কারণ মহাবিশ্বের বিভিন্ন বায়ুমণ্ডলের দ্বারা যখন তারার আলো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায় তখন সেটি বিভিন্ন বায়ুমণ্ডলের ভিতরে কেঁপে উঠে এবং দূর থেকে আমরা সেই আলোকে এই কারণে জ্বলতে এবং নিভতে দেখি।