আন্টার্কটিকার অবস্থান লেখ।
গ্ৰিক শব্দ ‘Antarktika’ র অর্থ ‘ উত্তরের বিপরীত। দক্ষিণ মেরুবিন্দু থেকে 60° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে প্রায় গোলাকার এই মহাদেশটাকে কুমেরু বৃত্তরেখা এবং কুমেরু মহাসাগর ঘিরে রেখেছে।
কে প্রথম আন্টার্কটিকা পৌঁছান?
১৯১১ খ্রীস্টাব্দে ১৯ শে অক্টোবর নয়ওয়ের অভিযাত্রী রোয়াল্ড আমুন্ডসেন ও তাঁর সঙ্গীরা বেসক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে ১৯১১ খ্রীস্টাব্দে ১৪ ডিসেম্বর তাঁরাই প্রথম পৃথিবীর দক্ষিণ মেরু অর্থাৎ আন্টার্কটিকায় পৌঁছান।
আন্টার্কটিকায় ভারতের গবেষণা কেন্দ্রগুলির নাম কি?
১৯৮২ সালে ৯ জানুয়ারি, প্রথম ভারতীয় অভিযাত্রী দল আন্টার্কটিকায় পৌঁছায়। স্থাপিত হয় ভারতের প্রথম গবেষণাকেন্দ্রটি যার নাম ‘দক্ষিণ গঙ্গোত্রী’।
আবার ১৯৮৮ সালে ২৬ মার্চ অষ্টম অভিযাত্রী দল দক্ষিণ গঙ্গোত্রী থেকে ৭০ কিমি দূরে ‘মৈত্রী’ নামে আর একটি গবেষণাকেন্দ্র স্থাপন করেন।
আন্টার্কটিকা পৃথিবীর কততম মহাদেশ?
আন্টার্কটিকা পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ (১ কোটি ৪০ লক্ষ বর্গ কিমি)।
আন্টার্কটিকার জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নাম লেখ।
প্রশান্ত মহাসাগরের রস উপসাগরের তীরে ‘মাউন্ট এরেসাস’ আন্টার্কটিকার জীবন্ত আগ্নেয়গিরি।
আন্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি?
আন্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম হল ‘ভিনসন ম্যাসিফ‘ (৪৮৯২ মিটার)।
পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহের নাম কি?
আন্টার্কটিকা মহাদেশের ‘ল্যাম্বার্ট হিমবাহ‘ পৃথিবীর দীর্ঘতম হিমবাহ।
আন্টার্কটিকা মহাদেশের উচ্চতা কত?
আন্টার্কটিকা মহাদেশ একটি বিশাল মালভূমি,যার উচ্চতা ২০০০ থেকে ৫০০০ মিটার।
পৃথিবীর শীতলতম স্থান কোথায় অবস্থিত?
রাশিয়ার গবেষণাকেন্দ্র ‘ভস্টক‘ এর সর্বনিন্ম তাপমাত্রা -89.2° সেলসিয়াস। এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম স্থান।
Read– ভারত সম্পর্কিত কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন।
আন্টার্কটিকা মহাদেশের তাপমাত্রা সারাবছর কেমন থাকে?
আন্টার্কটিকা মহাদেশে শীতকালে তাপমাত্রা -৪০° থেকে -৭৫° সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। আবার গ্ৰীষ্মকালে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে -২০° সেলসিয়াসে পৌঁছায়।
আন্টার্কটিকার জীবজগৎ কেমন?
আন্টার্কটিকা মহাদেশ সবসময় তুষারাবৃত থাকায় এখানে কোনো গাছপালা জন্মায় না। তবে গ্ৰীষ্মকালে সমুদ্রের ধারে সামান্য বরফ গলে গেলে সেখানে মস, লাইকেন প্রভৃতি জন্মায়।
আন্টার্কটিকার ভয়ংকর ঠান্ডাতে একমাত্র স্থায়ী বাসিন্দা পেঙ্গুইন পাখি। এছাড়া সীল, তিমি, সামুদ্রিক পাখি ইত্যাদি দেখা যায়। আন্টার্কটিকার সমুদ্রে চিংড়ি জাতীয় ক্রিল মাছ অনেক দেখা যায়।এই ক্রিল মাছ পেঙ্গুইনের প্রধান খাদ্য।
আন্টার্কটিকা মহাদেশে কতগুলো গবেষণাকেন্দ্র আছে?
আন্টার্কটিকা মহাদেশ কোনো দেশের অধীন নয়। আন্টার্কটিকা পৃথিবীর সমস্ত দেশের আন্তর্জাতিক ভূখণ্ড। এখানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, নয়ওয়ে, নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স, ভারত, জার্মানি, জাপান, আর্জেন্টিনা সহ প্রায় ৪০ টি দেশের ১০০ টিরও বেশি গবেষণাকেন্দ্র আছে।
কোন চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর সকল দেশ আন্টার্কটিকায় গবেষণা করার সুযোগ পাবে?
১৯৫৯ সালে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর যেকোনো দেশ এই মহাদেশে সমস্তরকম বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুযোগ পাবে। আন্টার্কটিকার প্রাকৃতিক সম্পদে কোনো দেশের নিজস্ব অধিকার থাকবে না। পৃথিবীর সকল দেশকেই এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
Read- বায়ুদূষণ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন
আন্টার্কটিকার ভবিষ্যত কী?
দক্ষিণ মেরুতে চিরতুষারে ঢাকা এই মহাদেশের আবহাওয়া, প্রাকৃতিক পরিবেশ সারা পৃথিবীর জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করে।তাই এই মহাদেশের ভবিষ্যত আসলে সারা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ।
কিন্তু বিশ্ব উষ্ণায়ন, ওজোন স্তর ক্ষয়, বায়ুদূষণ ইত্যাদি কারণে আন্টার্কটিকার দূষণমুক্ত বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক পরিবেশ, মেঘমুক্ত স্বচ্ছ আকাশ,নির্মল বাতাস- সবকিছুই এখন চরম সংকটে। ক্রমাগত উষ্ণতা বাড়ার ফলে প্রতিদিন একটু একটু করে গলে যাচ্ছে আন্টার্কটিকার বরফ, কমে যাচ্ছে মহাদেশটার আয়তন। ফলে ক্রিল, সীল, পেঙ্গুইন সবারই সংখ্যা কমছে, নষ্ট হচ্ছে আন্টার্কটিকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য।