ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় সম্বন্ধীয় কিছু প্রশ্ন আজকের লেখায় আলোচনা করা হল।সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কল্পিত রেখা দুটির নাম কি?
পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কল্পিত রেখা দুটির নাম হল-
- নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখা বা 0° অক্ষরেখা।
- মূলমধ্যরেখা বা 0° দ্রাঘিমারেখা।
নিরক্ষরেখা কাকে বলে?
সুমেরু বিন্দু ও কুমেরু বিন্দু থেকে সমান দূরত্বে পৃথিবীর ঠিক মাঝখানে যে কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখাটি পৃথিবীকে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টন করে আছে, তাকে নিরক্ষরেখা বলে।
নিরক্ষরেখার সাহায্যে পৃথিবীকে সমান দুটি গোলার্ধে ভাগ করা যায়।
- নিরক্ষরেখার উত্তরের অংশ উত্তর গোলার্ধ।
- নিরক্ষরেখার দক্ষিণের অংশ দক্ষিণ গোলার্ধ।
নিরক্ষরেখাকে মহাবৃত্ত বলা হয় কেন?
নিরক্ষরেখা হল অক্ষরেখা গুলি র মধ্যে দীর্ঘতম।এর দৈর্ঘ্য পৃথিবীর পরিধির সমান। তাই এটি মহাবৃত্ত( Great Circle) নামে পরিচিত।
নিরক্ষরেখার মান কত?
নিরক্ষরেখার মান হল 0°।
নিরক্ষীয় তল কাকে বলে?
নিরক্ষরেখা থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দুর দিকে গেলে পৃথিবীর মধ্যভাগ বরাবর যে একটি তল পাওয়া যায়, তাকে নিরক্ষীয় তল বলে।
নিরক্ষীয় তল বরাবর পৃথিবীকে দুটি সমান গোলার্ধে ভাগ করা হয়- উত্তর গোলার্ধ ও দক্ষিণ গোলার্ধ।
নিরক্ষরেখাকে বিষুবরেখা বলা হয় কেন?
‘বিষুব’ কথাটির অর্থ সমান দিন রাত্রি। একমাত্র নিরক্ষরেখার ওপর দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য সমান হয় বলে রেখাটির অপর নাম বিষুবরেখা।
মূলমধ্যরেখা কাকে বলে?
পৃথিবীর ঠিক মাঝখানে যে কাল্পনিক বৃত্তাকার রেখাটি পৃথিবীকে উত্তর-দক্ষিণে বেষ্টন করে আছে, তাকে মূলমধ্যরেখা বলা হয়।
মূলমধ্যরেখার সাহায্যে পৃথিবীকে সমান দুটি গোলার্ধে ভাগ করা হয়-
- মূলমধ্যরেখার পূর্বের অংশ পূর্ব গোলার্ধ।
- মূলমধ্যরেখার পশ্চিমের অংশ পশ্চিম গোলার্ধ।
মূলমধ্যরেখার মান কত?
মূলমধ্যরেখার মান হল 0°।
মূলমধ্যরেখা কোন শহরের ওপর দিয়ে বিস্তৃত?
মূলমধ্যরেখা গ্ৰেটার লন্ডনের রয়্যাল গ্ৰিনিচ শহরের ওপর দিয়ে বিস্তৃত।
অক্ষরেখা কাকে বলে?
নিরক্ষরেখার সমান্তরালে পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত কাল্পনিক রেখা গুলিকে অক্ষরেখা বলা হয়।
অক্ষরেখাগুলি পরস্পর সমান্তরাল বলে এদের সমাক্ষরেখা বলা হয়।
✓প্রতি ডিগ্রি অক্ষরেখাকে 60′ (মিনিট) -এ ও প্রতি মিনিট অক্ষরেখাকে 60″ (সেকেন্ড) -এ ভাগ করা হয়েছে।
অক্ষরেখা কত প্রকার ও কি কি?
অক্ষরেখা সাধারণত দুই প্রকার।যথা-
- নিরক্ষরেখার উত্তরের অক্ষরেখাগুলি উত্তর অক্ষরেখা।
- নিরক্ষরেখার দক্ষিণেরঅক্ষরেখাগুলি দক্ষিণ অক্ষরেখা।
Read– শিলা সম্বন্ধীয় সংক্ষীপ্ত প্রশ্ন
অক্ষরেখার বৈশিষ্ট্য লেখ।
অক্ষরেখার বৈশিষ্ট্য গুলি হল-
- অক্ষরেখা পরস্পর সমান্তরাল।
- অক্ষরেখাগুলি পূর্ণবৃত্ত হয়।
- অক্ষরেখা ডিগ্রিতে (°) পরিমাপ করা হয়।
- অক্ষরেখার পরিধি ক্রমশ মেরুর দিকে কমে যায়।
- অক্ষরেখার মান মেরুর দিকে বেড়ে যায়।
- অক্ষরেখার মধ্যে নিরক্ষরেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।এর মান 0°।
- 90° উত্তর ও 90° দক্ষিণ হল যথাক্রমে উঃ মেরুবিন্দু এবং দঃ মেরুবিন্দু।
অক্ষাংশ কাকে বলে?
নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থিত কোন স্থানের কৌনিক দূরত্বের মান হল অক্ষাংশ।
অক্ষাংশ নির্ণয় করার যন্ত্রের নাম কি?
অক্ষাংশ নির্ণয় করার যন্ত্রের নাম সেক্সট্যান্ট।
দ্রাঘিমারেখা কাকে বলে?
মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্বে ও পশ্চিমে উত্তর মেরু বিন্দু থেকে দক্ষিন মেরু বিন্দু পর্যন্ত অঙ্কিত কাল্পনিক রেখা গুলিকে দ্রাঘিমারেখা বলে।
দ্রাঘিমারেখার অপর নাম দেশান্তররেখা।
✓প্রতি ডিগ্রি দ্রাঘিমারেখাকে 60′ (মিনিট) -এ ও প্রতি মিনিট অক্ষরেখাকে 60″ (সেকেন্ড) -এ ভাগ করা হয়েছে।
দ্রাঘিমারেখা কত প্রকার ও কি কি?
দ্রাঘিমারেখা সাধারণত দুই প্রকার।যথা-
- মূলমধ্যরেখার পূর্বের দ্রাঘিমারেখাগুলি পূর্ব দ্রাঘিমারেখা।
মূলমধ্যরেখার পশ্চিমের দ্রাঘিমারেখাগুলি পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা।
- মূলমধ্যরেখার পশ্চিমের দ্রাঘিমারেখাগুলি পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা।
মূলমধ্যরেখার পশ্চিমের দ্রাঘিমারেখাগুলি পশ্চিম দ্রাঘিমারেখা।
দ্রাঘিমারেখার বৈশিষ্ট্য লেখ।
দ্রাঘিমারেখার বৈশিষ্ট্য হল-
- দ্রাঘিমারেখা পরস্পর সমান্তরাল নয়।
- দ্রাঘিমারেখাগুলি অর্ধবৃত্ত হয়।
- দূটি দ্রাঘিমারেখার মধ্যে দূরত্ব নিরক্ষরেখার কাছে সবচেয়ে বেশি। নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে দূরত্ব ক্রমশ কমতে থাকে।
- প্রত্যেক টি দ্রাঘিমারেখা উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে গিয়ে মিশেছে।
- 180° পূর্ব ও 180° পশ্চিম যেহেতু একটিই দ্রাঘিমারেখা,তাই তার পূঃ ও পঃ উল্লেখ করতে হয় না।
Read=- পৃথিবীর পরিক্রমন সম্বন্ধীয় সংক্ষীপ্ত প্রশ্ন
দ্রাঘিমাংশ কাকে বলে?
মূলমধ্যরেখা থেকে পূর্ব বা পশ্চিমে অবস্থিত কোনো স্থানের কৌণিক দূরত্বের মানকে ওই স্থানের দ্রাঘিমাংশ বলা হয়।
পৃথিবীতে মোট দ্রাঘিমা রেখার সংখ্যা কয়টি?
পৃথিবীতে মোট দ্রাঘিমা রেখার সংখ্যা 359।
ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমার মান কত?
ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমার মান 82°30’।
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার মান কত?
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার মান 180°।
স্থানীয় সময় কাকে বলে?
যে কোন স্থান থেকে আকাশে সূর্যের সর্বোচ্চ অবস্থান (90°) দেখে যে সময় গনণা করা হয়, তাকে স্থানীয় সময় বেলা হয়। অর্থাৎ দ্রাঘিমা অনুযায়ী কোনো স্থানের সময়কে ওই স্থানের স্থানীয় সময় বেলা হয়।
প্রমাণ সময় কাকে বলে?
একই দেশের বিভিন্ন অংশে নানা রকম স্থানীয় সময় দেখা যায়। ফলে নানারকম অসুবিধা দেখা দেয়।তাই এই অসুবিধা এড়াবার জন্য ঠিক মাঝ বরাবর একটি দ্রাঘিমাকে প্রমাণ দ্রাঘিমা ধরা হয়। এই প্রমাণ দ্রাঘিমার স্থানীয় সময়কে ওই দেশের প্রমাণ সময় বলা হয়।
ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমা কোন শহরের ওপর দিয়ে বিস্তৃত?
ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমা এলাহাবাদ শহরের ওপর দিয়ে বিস্তৃত।
GPS কথাটির পুরো অর্থ কি?
GPS কথাটির পুরো অর্থ গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (Global Positioning System)।
IST কথাটির পুরো অর্থ কি?
IST কথাটির পুরো অর্থ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইম (Indian Standard Time)।
GMT কথাটির পুরো অর্থ কি?
GMT কথাটির পুরো অর্থ গ্ৰিনউইচ মিন টাইম জোন (Greenwich Mean Time Zone)।