শব্দদূষণ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন।

শব্দদূষণ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
শব্দদূষণ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন

শব্দদূষণ কাকে বলে?

মানুষের বা কোনো প্রানীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো জোরালো আওয়াজ এর শ্রবণশক্তি হ্রাস হতে পারে তাকে শব্দ দূষণ বলে।

       যানবাহন, কলকারখানা থেকে শব্দদূষণকারী আওয়াজ নির্গত হয়।

শব্দের তীব্রতা মাপার যন্ত্রের নাম কি?

শব্দের তীব্রতা মাপার যন্ত্রের নাম ডেসিবেল মিটার।

শব্দের তীব্রতা মাপার এককের নাম কি?

শব্দের তীব্রতা মাপার এককের নাম ডেসিবেল (db)।

কত ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ আমাদের শ্রবণেন্দ্রিয়ের পক্ষে নিরাপদ?

65 ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ আমাদের শ্রবণেন্দ্রিয়ের পক্ষে নিরাপদ।

Read– আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী।

শব্দদূষণের কারণ লেখ।

বিভিন্ন উচ্চ তীব্রতা যুক্ত শব্দ পরিবেশে শব্দদূষণের সৃষ্টি করে। যেমন-

কলকারখানার যন্ত্রপাতির তীব্র শব্দ, যানবাহনের শব্দ, ইলেকট্রিক হর্নের শব্দ, মাইকেল জোরালো আওয়াজ,  বাজির ফাটানোর শব্দ ইত্যাদি।

    এছাড়া বাড়িতে টিভি, সাউন্ড সিস্টেম প্রভৃতির জোরালো আওয়াজ, মোটর এর শব্দ, অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত জেনারেটারের জোরালো আওয়াজ ইত্যাদি।

Read– বরফে ঢাকা মহাদেশ বা আন্টার্কটিকা সম্বন্ধীয় কিছু প্রশ্ন।

শব্দদূষণের ক্ষতিকারক প্রভাব লেখ।

  • 65 ডেসিবেল এর বেশি তীব্রতা যুক্ত শব্দ শ্রবণেন্দ্রিয়ের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। 150 থেকে 180 ডেসিবেল শব্দ মানুষকে চির জীবনের জন্য বধির করে দিতে পারে।
  • শব্দ দূষণের ফলে শোনার ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।যারা কলকারখানায় কাজ করে বা যারা খুব জোরে গান বাজনা শোনে তাদের এই সমস্যা হয়।
  • অতিরিক্ত প্রাবল্যের শব্দ অনেকক্ষণ ধরে শুনলে বিরক্তি, ক্লান্তি নিয়ে আসে। এর ফলে মানসিক অবসাদ, বিষন্নতার সৃষ্টি হয়।
  •  শব্দদূষণের ফলে আমরা স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত হতে পারি, মনের একগ্ৰতা কমে যায়। ফলে কোনো কাজে মন লাগে না।
  • শব্দদূষণের ফলে উচ্চ চাপ, অনিদ্রা, হজমের সমস্যা, পাকস্থলীর সমস্যা ইত্যাদি হয়।
  • অধিক তীব্র শব্দ হ্নদ্ রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক। এমনকি অধিক শব্দের ফলে তাদের মৃত্যু হতে পারে।
  • প্রসূতি নারী অনেকদিন ধরে শব্দদূষণের মধ্যে থাকলে কম ওজনের, জড়বুদ্ধিসম্পন্ন সন্তান প্রসব করতে পারে।

শব্দদূষণ প্রতিকারের উপায় লেখ।

  • শব্দ যেখানে সৃষ্টি হচ্ছে তার শব্দরোধী দেয়াল দিয়ে ঘিরে ফেলা যায় বা সাইলেন্সার লাগানো যায়।
  • শব্দের উৎস ও শ্রোতার মধ্যে দূরত্ব বাড়াতে হবে। স্কুল, হাসপাতাল ও বাড়ির চারদিকে গাছ লাগিয়ে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্ৰহন করে শব্দ বাজি ফাটানো বন্ধ করতে হবে।
  • অকারণে হর্ন বাজানো, উচ্চস্বরে টিভি, রেডিও, স্পিকার বাজানো বন্ধ করতে হবে।
  • কলকারখানার যন্ত্রপাতির তীব্র আওয়াজ থেকে নিজেদের কান বাঁচানোর জন্য ইয়ার প্লাগ, তুলো ব্যবহার করা হয়।
  • শহরের নকশা এমনভাবে তৈরি করা দরকার যাতে কলকারখানা, বিমানবন্দর থেকে জনবসতি দূরে থাকে। 
  • পূজো প্যান্ডেল বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অযথা মাইট বাজানো বন্ধ করতে হবে।
  • যেহেতু শব্দদূষণ ব্যক্তি, সমাজ ও দেশের ক্ষতি করে তাই প্রশাসনিকভাবে সুষ্ঠ পরিকল্পনা গ্ৰহণ করতে হবে।
  • সর্বোপরি ব্যাপকভাবে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। 

পশু পাখি দের উপর শব্দদূষণের প্রভাব কি?

শব্দদূষণ শুধু মানুষের উপরই ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেনি, পশুপাখি দের ওপরেও সমান ভাবেই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

  • তীব্র আওয়াজের ফলে অনেক সময় পশুপাখি বধির হয়ে যায়।
  • প্রচণ্ড আওয়াজ জীবজন্তুর স্বাভাবিক প্রজনন ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্ৰস্ত করে।
  • বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় শব্দদূষণ জীবজন্তুর মানসিক ও ব্যবহারিক স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলে।
  • একটি গবেষণায় জানা যায় শব্দদূষণ জীবজন্তুর স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করে‌, হার্টের গতিও বাড়িয়ে দেয়।
  • যানবাহনের শব্দে জেব্রার বংশবৃদ্ধি হ্রাস পায়, স্বাস্থ্য, প্রজনন ক্ষতিগ্ৰস্ত হচ্ছে এমনকি তাদের আগামী প্রজন্মের উপরেও ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে।
  • একটি গবেষণায় দেখা গেছে কোলাহল মুক্ত জায়গার পাখিদের ছানা শান্ত জায়গার পাখিদের ছানার তুলনায় আকারে ছোটো হয় এবং অনেক সময় জন্মের পর মারা যায়।

  ‌

This post was updated on 2023-02-22 17:58:20.

Leave a Comment

error: Content is protected !!