বয়স-লিঙ্গ পিরামিড কাকে বলে? বয়স-লিঙ্গ পিরামিডের শ্রেণীবিভাগ কর।

বয়স-লিঙ্গ পিরামিড কাকে বলে ও বয়স-লিঙ্গ পিরামিডের শ্রেণীবিভাগ এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো। তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারো।

Read- মৃত্তিকার অবনমন বলতে কী বোঝো এবং নিয়ন্ত্রণের উপায় লেখ।

বয়স-লিঙ্গ পিরামিড

বয়স-লিঙ্গ পিরামিড:

নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক যে পিরামিডের অনুভূমি অক্ষে নারী-পুরুষের পরিমাণ এবং উল্লম্ব অক্ষে তাদের বয়স দেখানো হয়, তাকে বয়স-লিঙ্গ পিরামিড বা জনসংখ্যা পিরামিড বলে।

গুরুত্ব:

  • বয়স-লিঙ্গ পিরামিডের সাহায্যে জনসংখ্যার গঠন প্রকাশ ও বিশ্লেষণ করা যায়।
  • কোন দেশ জনসংখ্যা বিবর্তনের কোন পর্যায়ে আছে তা জানা যায়।
  • কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণ, নির্ভরশীল জনসংখ্যার পরিমাণ এবং জন্মহার ও মৃত্যুহার সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।

বয়স-লিঙ্গ পিরামিডের শ্রেণীবিভাগ:

নারী-পুরুষের বয়স ভিত্তিক কাঠামো যে সকল জনসংখ্যা কে পিরামিডের মাধ্যমে প্রকাশ করা যায়, তাদের আকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। নীচে ভাগগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল –

1. প্রথম শ্রেণীর পিরামিড:

প্রথম শ্রেণীর পিরামিড

জন্ম ও মৃত্যুহার উভয়ই বেশি হলে পিরামিডের ভূমি খুবই বিস্তৃত হয় এবং শীর্ষ দেশ তীক্ষ্ণ হয়। ফলে পিরামিডটি আদর্শ পিরামিডের রূপ নেয়। এরূপ পিরামিডে অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় জনসংখ্যা কম হয় এবং নির্ভরশীল জনসংখ্যার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে এরূপ পিরামিডটি অনুন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা উল্লেখ করে।

যেমন – আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডা, নাইজেরিয়া, ইথিওপিয়া প্রভৃতি দেশের পিরামিড প্রথম শ্রেণীর পিরামিড।

2. দ্বিতীয় শ্রেণীর পিরামিড:

 দ্বিতীয় শ্রেণীর পিরামিড

এই পিরামিডের ভূমি অত্যন্ত প্রশস্ত এবং শীর্ষ অধিক তীক্ষ্ণ। যে দেশের জন্ম হার অনিয়ন্ত্রিত কিন্তু মৃত্যুহার বর্তমানে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত, সেই দেশের জন্মহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুহার কমায় পিরামিডের ভূমিভাগ প্রথম শ্রেণীর অভিভাবক অপেক্ষা অধিক প্রশস্ত হওয়ায় এই পিরামিডটি দ্বিতীয় শ্রেণীর পিরামিডের অন্তর্গত। এই পিরামিডে সক্রিয় জনসংখ্যা কম কিন্তু নির্ভরশীল জনসংখ্যা বেশি। এই ধরনের পিরামিড দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।

যেমন – মেক্সিকো, ব্রাজিল, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি দেশের পিরামিড এই শ্রেণীর অন্তর্গত।

3. তৃতীয় শ্রেণীর পিরামিড:

তৃতীয় শ্রেণীর পিরামিড

এই ধরনের পিরামিডের ভূমিভাগ তেমন প্রশস্ত নয়। প্রথম শ্রেণীর পিরামিডের মতো শীর্ষ দেশ তীক্ষ্ণ নয়। এর মধ্যভাগ উত্তল প্রকৃতির। অর্থনৈতিক ভাবে সক্রিয় কর্মীর সংখ্যা অধিক। তাই নির্ভরশীল জনসংখ্যা এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে অনেক কম। পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলির জনসংখ্যা পিরামিড তৃতীয় শ্রেণী জনসংখ্যা পিরামিডের অনুরূপ।

ভারত আগে দ্বিতীয় শ্রেণীর অন্তর্গত হলেও বর্তমান দশকে এই শ্রেণীর অন্তর্গত হয়েছে।

4. চতুর্থ শ্রেণীর পিরামিড:

 চতুর্থ শ্রেণীর পিরামিড

বহুদিন যাবত কোন দেশের জন্ম হওয়ার মৃত্যুহার কম থাকার পর অভিবাসনের ফলে জন্ম হওয়ার হঠাৎ বেড়ে যায় তখন জনসংখ্যা পিরামিডের ভূমি বেশি প্রশস্ত হয় এবং ঘন্টা আকৃতির বিশিষ্ট পিরামিডের পরিণত হয়। এই পিরামিড ভবিষ্যতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির নির্দেশ দেয়।

যেমন – আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা প্রভৃতি দেশে এই শ্রেণীর পিরামিড লক্ষ্য করা যায়।

5. পঞ্চম শ্রেণীর পিরামিড:

পঞ্চম শ্রেণীর পিরামিড

মৃত্যুহার অপেক্ষা জন্মহার কম হলে জনসংখ্যা পিরামিডের ভূমিভাগ ছোটো হতে থাকে, অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় কর্মীর সংখ্যা বাড়ে এবং বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সংখ্যা যথেষ্ঠ বেশি থাকে। ফলে নির্ভরশীল জনসংখ্যা ভীষণভাবে কমে যায়। এর আকৃতি অনেকটা নাসপাতির আকারে হয়।

যেমন – সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, জাপান প্রভৃতি দেশের পিরামিড এই শ্রেণীর অন্তর্গত।

Read- শিল্প সংক্রান্ত কিছু অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী।

This post was updated on 2023-02-22 17:57:04.

নমস্কার , আমরা দেবলীনা ও শুভদীপ । আমি ওয়েবসাইটের লেখক, আমি ভূগোলে স্নাতক করেছি। আমার উদ্দেশ্য শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়ের জন্য ভূগোলের গুণমান নোট এবং উপাদান শেয়ার করা এবং আমার দিক থেকে সর্বোপরি সাথে থাকা।

Leave a Comment

error: Content is protected !!