রেলপথ পরিবহনের সুবিধাগুলি আলোচনা কর, সোনালী চতুর্ভুজ লেখ।

রেলপথ পরিবহনের সুবিধাগুলি এবং সোনালী চতুর্ভুজ এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।

ভূমিকা:

সকল পরিবহন ব্যবস্থার মধ্যে রেলপথ সর্বোত্তম। রেলপথের দৈর্ঘ্যে ভারত এশিয়াতে প্রথম এবং পৃথিবীতে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। 1853 খ্রীষ্টাব্দে মুম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত 34 কিমি রেলপথ ভারতে প্রথম স্থাপিত হয়। ভারতীয় রেলপথের প্রকৃত উন্নতি শুরু হয় 1857 খ্রিস্টাব্দ থেকে।

রেলপথ পরিবহনের প্রধান সুবিধা গুলি হল –

1. দ্রুতগামী স্থল পরিবহন:

স্থলপথে সর্বাপেক্ষা দ্রুতগামী ব্যবস্থা হল রেলপথ। দূরবর্তী স্থানে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে রেলপথ বিশেষ ভূমিকা গ্ৰহণ করে।

2. সময়:

রেলপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে অপেক্ষাকৃত কম সময় লাগে। রেল নির্দিষ্ট সময়সূচী অনুযায়ী চলে বলে, যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন অনেক সুবিধাজনক হয়।

3. পরিবহন ব্যয়:

সড়ক পথ ও বিমান পথ অপেক্ষা রেলপথে পরিবহন ব্যয় অনেক কম।

4. পণ্যের প্রকৃতি:

রেল পথে ভারী পণ্য পাঠানো সুবিধাজনক। কারণ পণ্য বোঝাই থেকে শুরু করে পণ্য গুদামজাতকরণ পর্যন্ত সমস্ত দায়িত্ব রেল পরিবহন সংস্থা বহন করে।

5. কর্মসংস্থান:

রেলপথ পরিবহন ব্যবস্থায় বহু লোক নিযুক্ত হয়, তাই রেলপথ পরিবহন ব্যবস্থা বিশাল কর্মসংস্থান ঘটায়।

6. ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা:

রেল পরিবহনের মাধ্যমে পাঠানোর দ্রব্য নষ্ট হয়ে গেলে তা রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যায়।

7. যানজট:

রেলপথ পরিবহনে কোন যানজট সমস্যা নেই।

8. প্রাকৃতিক বিপর্যয়:

প্রাকৃতিক দুর্যোগেও রেলপথ পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখা সম্ভব হয় বলে, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের উন্নয়নে এর ভূমিকা অনেক বেশি।

9. নিরাপত্তা:

রেলপথ পরিবহন ব্যবস্থা অনেক বেশি নিরাপদ ও আরামদায়ক গাড়িতে পাহারার ব্যবস্থা থাকে।

10. জাতীয় আয় বৃদ্ধি:

রেলপথ পরিবহন ব্যবস্থা জাতীয় আয় বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

11. প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে:

দেশের অভ্যন্তরে শান্তি শৃংখলা রক্ষা করতে ও বহিঃশত্রুর আগমন প্রতিরোধ করতে রেলপথ পরিবহনের গুরুত্ব অগ্রগণ্য। দ্রুত সৈন্য, অস্ত্রশস্ত্র ও খাদ্যদ্রব্য যুদ্ধ ক্ষেত্রে রেলপথ পরিবহনের মাধ্যমে সম্ভব।

সোনালী চতুর্ভুজ:

সোনালী চতুর্ভুজ কর্মসূচি অনুযায়ী ভারতের চারটে বড় মেট্রোপলিটন শহর দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও কলকাতাকে 6 লেন বিশিষ্ট সড়ক পথ দ্বারা যুক্ত করা হয়েছে।

উদ্যোগ:

1999 খ্রিস্টাব্দে 2রা জানুয়ারি ভারতের জাতীয় সড়ক পথ কর্তৃপক্ষ (NHAI) এই পরিকল্পনা গ্ৰহণ করে।

দৈর্ঘ্য:

এই চতুর্ভুজের চারটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান নয়।

  • দিল্লি-মুম্বাই 1419 কিমি।
  • মুম্বাই-চেন্নাই 1290 কিমি।
  • চেন্নাই-কলকাতা 1684 কিমি।
  • কলকাতা-দিল্লি 1453 কিমি।

সমাপ্তি:

2011 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই রাজপথ সংস্কার সম্পন্ন হয়।

FAQ/ বহুচর্চিত প্রশ্নাবলী

শিপিং লাইন কী?

ইংরেজি শিপিং শব্দটি জাহাজ পরিবহন এর সমার্থক। জাহাজ পরিবহন কতগুলি সংস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়। সাধারণভাবে শিপিং লাইন বলতে জাহাজ পরিবহন সংস্থাগুলিকে বোঝায়, যে জাহাজ সংস্থাগুলি নিজেদের জাহাজে সামুদ্রিক পথে পণ্য সামগ্রী এক বন্দর থেকে আরেক বন্দরে পৌঁছে দেয়।

শিপিং লেন কী?

সমুদ্রপথে জাহাজ চলাচলেও সুনির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করা হয়। এই পথগুলিকে শিপিং লেন বলা হয়। এই শিপিং লাইনগুলি অনুসরণ করতে মার্কেটার্স চার্ট এর সাহায্য নেওয়া হয়, ফলে দুটি বন্দরের মধ্যে দূরত্ব হ্রাস পায়, সমুদ্রপথে জাহাজ হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে না, এবং সমুদ্রের ডুবন্ত পাহাড়, হিমশৈল ইত্যাদির বাঁধা এড়ানো যায়।

Leave a Comment

error: Content is protected !!