উপকূলের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর।

উপকূলের শ্রেণীবিভাগ এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো। তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারো।

Read- বয়স-লিঙ্গ পিরামিড কাকে বলে? বয়স-লিঙ্গ পিরামিডের শ্রেণীবিভাগ কর।

উপকূলের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর।

ভূমিকা:

জনসন, শেপার্ড, ভ্যালেন্টাইন প্রমুখ ভূমিরূপ বিঞ্জানী নানা উপাদান বা বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে উপকূলের শ্রেণীবিভাগ করেছেন। নিম্নে ভাগগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হল –

A. নিমজ্জিত উপকূল:

সাধারণত যখন ভূআলোড়নের জন্য উপকূল ভাগ অবনমিত হয়ে বা সমুদ্র পৃষ্ঠ উত্থিত হয়ে উপকূল জলমগ্ন হয়, তখন তাকে নিমজ্জিত উপকূল বলে।

যেমন – ভারতের মালাবার উপকূল।

নিমজ্জিত উপকূল দুই প্রকার। যথা –

1. নিমজ্জিত উচ্চ উপকূল:

কোনো উচ্চভূমির অবনমনের ফলে কিংবা সমুদ্র জলতল বৃদ্ধির ফলে নিমজ্জিত উচ্চ উপকূল রেখা সৃষ্টি হয়। ইহা আবার 3 ভাগে বিভক্ত। যথা –

a. রিয়া উপকূল:

উপকূলের সঙ্গে আড়াআড়িভাবে বিস্তৃত শৈলশিয়ার মধ্যেলম্বা লম্বি ভাবে বিস্তৃত নদী উপত্যকা বসে গেলে বা অন্য কোন কারণে সমুদ্র লিখিত হলে নদী উপত্যকা জলবর্ণ হয়ে পড়ে একে রিয়া উপকূল বলা হয়। Ria de Vigo উপসাগরের নামেই রিয়া নামকরণ করা হয়েছে।

যেমন – দক্ষিণ-পশ্চিম আয়ারল্যান্ডের উপকূল এর উদাহরণ।

b. ফিয়র্ড উপকূল:

হিমবাহ উপত্যকার গভীরতা সমুদ্রপৃষ্ঠ অপেক্ষা বেশি হলে অথবা ভূ-আলোড়নের ফলে বরফ মুক্ত হিমবাহ উপত্যকা সমুদ্রের জলে নিমজ্জিত হলে, যে উপকূলের সৃষ্টি হয় তাকে ফিয়র্ড উপকূল বলে।

যেমন – গ্ৰিনল্যান্ডের নোরবেন্দ ফ্যোর পৃথিবীর দীর্ঘতম (314 কিমি) ফিয়র্ড উপকূল।

c. ডালমেশিয়ান উপকূল:

উপকূলের সমান্তরাল এ অবস্থিত শৈলশিরা বিশিষ্ট পার্বত্যভূমি ভূ আয়রনের সমুদ্রে আংশিক নিমজ্জিত হয়ে হয়ে যে উপকূল গঠন করে তাকে ডালমেশিয়ান উপকূল বলে। যুগোস্লাভিয়ার অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের ডালমেশিয়া অঞ্চলের নাম অনুসারে এই উপকূলের নামকরণ হয়েছে।

2. নিমজ্জিত নিম্ন উপকূল:

ভূ-আলোড়নের ফলে কিংবা সমুদ্র তলের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে কোন বিস্তৃত নিম্ন উপকূলের নিমজ্জন ঘটলে এই উপকূলের সৃষ্টি হয়।

যেমন – দক্ষিণ সুইডেনে এই প্রকার উপকূল দেখা যায়।

B. উত্থিত উপকূল:

সাধারণত ভলানের ফলে উপকূল অঞ্চল উত্থিত হলে কিংবা সমুদ্র বক্ষ বসে গেলে সমুদ্র পৃষ্ঠের তুলনায় উপকূল রেখা অনেক উপরে অবস্থান করে, একে উত্থিত উপকূল বলে।

যেমন – কৃষ্ণা নদীর বদ্বীপ থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত উপকূল এই জাতীয়।

C. যৌগিক উপকূল:

যে উপকূল রেখায় একাধিকবার উত্থান ও নিমজ্জন উভয়ই ঘটেছে তাকে যৌগিক উপকূল রেখা বলে।

যেমন – কেরালার মালাবার উপকূল।

D. প্রশমিত বা নিরপেক্ষ উপকূল:

যে উপকূলে উত্থান, অবনমন বা নিমজ্জন কোন কিছুই ঘটেনি, শুধুমাত্র পলি সঞ্চয়ে গঠিত তাকে প্রশমিত বা নিরপেক্ষ উপকূল বলে।

যেমন – প্রবাল প্রাচীর সৃষ্ট উপকূল রেখা, অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূল।

This post was updated on 2023-02-22 17:57:05.

Leave a Comment

error: Content is protected !!