উপগ্ৰহ চিত্র তোলার বিভিন্ন পর্যায়গুলি এবং উপগ্ৰহ চিত্রের বৈশিষ্ট্য এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
উপগ্ৰহ চিত্র তোলার পর্যায়গুলি:
1. শক্তির উৎস:
আলোক শক্তির সাহায্যে দূরসংবেদন ব্যবস্থায় ছবির তোলা হয়। বস্তু থেকে প্রতিফলিত আলোক রশ্মির মাত্রাকে সংগ্ৰহ করে এবং কাজে লাগিয়ে উপগ্ৰহ চিত্র প্রস্তুত করা হয়।
a. কৃত্রিম আলোকশক্তি:
কোনো radar থেকে কৃত্রিমভাবে আলো পাঠিয়ে বস্তু থেকে ওই আলোর প্রতিফলন কে কাজে লাগিয়ে উপগ্রহ চিত্র তোলার পদ্ধতিকে সক্রিয় দূর সংবেদন প্রক্রিয়া বলে।
b. প্রাকৃতিক আলোকশক্তি:
আগত সূর্যালোক বস্তু থেকে প্রতিফলিত হয়ে ফেরার সময় দূর সংবেদনের সাহায্য গ্রহণ করে উপগ্রহ চিত্র তোলার পদ্ধতিকে নিষ্ক্রিয় সংবেদন পদ্ধতি বলে।
2. আগত শক্তি:
- কৃত্রিম উৎসের আলোক রশ্মি বায়ুমন্ডলের মধ্য দিয়ে আসার সময় ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সাহায্যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের ওপর পতিত হয়।
- সূর্য থেকে আগত রশ্মি শূন্য মধ্যম দিয়ে আসায় কোনো ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সম্মুখীন হয় না।
3. বস্তুর চরিত্র অনুযায়ী প্রতিফলনের ভিন্নতা:
- উপদানের তল মসৃণ হলে প্রতিফলন দ্রুত হয় এবং পরিমাণ অধিক হয়। তরঙ্গ দৈর্ঘ্য তুলনামূলকভাবে ছোট হয়।
- অমসৃণ তল বিশিষ্ট উপাদানের প্রতিফলনের মাত্রা কম এবং তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের প্রকৃতি ও অপেক্ষাকৃত বড় হয়।
4. প্রতিফলিত রশ্মির সঞ্চালন:
বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে প্রতিফলনের সময় আলোকরশ্মি বিভিন্ন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার পর ঘূর্নায়মান উপগ্রহের সাথে থাকা আলোকচিত্র গ্রহণকারী যন্ত্রের দিকে সঞ্চালিত হয়।
5. প্রতিফলিত রশ্মির সংগ্রহ:
ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন উপাদান থেকে প্রতিফলিত দীর্ঘ তরঙ্গের তড়িৎ চুম্বকীয় আলোকরশ্মি কৃত্রিম উপগ্রহের আলোকচিত্র গ্রহণকারী সেন্সর দ্বারা সংগৃহীত হয়।
6. তথ্য প্রেরণ এবং চিত্র প্রস্তুত করন:
কৃত্রিম উপগ্রহের সম্মিলিত আলোকরশ্মি ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত প্রক্রিয়াকরণ স্টেশনে পাঠানো হয়। এখানকার সেন্সরে পাওয়া তথ্যগুলি থেকে উপগ্রহ চিত্র প্রস্তুত করা হয়।
উপগ্রহ চিত্রের বৈশিষ্ট্য:
1. ভূপৃষ্ঠের উপাদানের প্রকৃত চরিত্র সন্ধান:
যেহেতু ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত বিভিন্ন উপাদানের প্রতিফলনও বিভিন্ন, সেই জন্য উপগ্রহ চিত্র দ্বারা ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন উপাদান ও তার বন্টন সম্পর্কে জানা সম্ভব।
2. দুর্গম স্থানের তথ্য লাভ:
দূর সংবেদনের মাধ্যমে তথ্য আহরিত হওয়ায় দুর্গম স্থানের মানচিত্র প্রস্তুত সম্ভব হয়।
3. তথ্যের বিশ্লেষণ:
উপগ্রহ চিত্র প্রস্তুতির সময় তথ্যগুলি যেহেতু ডিজিটাল রূপে সংগৃহীত হয়, তাই আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে কম্পিউটারে একে বিশ্লেষণ করা সম্ভব।
4. উপগ্রহ চিত্রে সাধারণত খুব ছোটো স্কেল ব্যবহৃত হয় (1:1 মিলিয়ন)।
5. উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে আবহাওয়া ও পরিবেশ সমীক্ষা করা হয়।
6. উপগ্ৰহ চিত্র রেকর্ডিং এর মাধ্যমে ধরে রাখা যায়।
7. উপগ্রহ চিত্র ত্রিমাত্রিক চিত্র প্রদর্শন করে।
8. উপগ্রহের মাধ্যমে অত্যন্ত বৃহৎ বা ব্যাপক অঞ্চলের চিত্র পাওয়া যায়।