ভারতের ভূপ্রকৃতির কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
ভূপ্রকৃতি অনুসারে ভারতকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি?
ভূপ্রকৃতি অনুসারে ভারতকে প্রধান পাঁচটি বিভাগে ভাগ করা যায়। যথা –
- উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল
- উত্তরের সমভূমি অঞ্চল
- উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল
- উপকূলের সমভূমি অঞ্চল
- দ্বীপ অঞ্চল
কোন কোন পর্বত শ্রেণী নিয়ে হিমালয় পর্বতমালা গঠিত হয়েছে?
প্রধানত চারটি পর্বত শ্রেণী নিয়ে পর্বতমালা গঠিত হয়েছে। যথা –
- টেথিস হিমালয়
- হিমাদ্রিবা উচ্চ হিমালয়
- হিমাচল বা মধ্য হিমালয়
- শিবালিক বা বহিঃ হিমালয়
দুন উপত্যকা কাকে বলে?
পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে হিমাচল ও শিবালিক পর্বতশ্রেনীর মধ্যবর্তী অংশে যে সব দীর্ঘ কিন্তু অল্প বিস্তৃত প্রায় সমতল উপত্যকা আছে সেগুলিকে দুন বলা হয়। দুন কথাটির আক্ষরিক অর্থ দুটি পর্বতের মধ্যে অনুদৈর্ঘ্য উপত্যকা।
যেমন – দেরাদুন (উত্তরাখণ্ড)।
কারেওয়া কি?
পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মাঝে 135 কিলোমিটার দীর্ঘ, 40 কিলোমিটার চওড়া, প্রায় 4921 বর্গ কিলোমিটার ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট কাশ্মীর উপত্যকা। প্রাচীনকালে এখানে সতিসার নামে একটি বড় হ্রদ ছিল। পরবর্তীকালে নদী ও হিমবাহের মিলিত সঞ্চয়কার্যের ফলে হ্রদ ভরাট হয়ে উঁচু মঞ্চের ন্যায় যে ভূমি গঠন করেছে তাকে কারেওয়া বলে। কারেওয়া অঞ্চল জাফরান, বাদাম, আখরোট চাষের জন্য বিখ্যাত।
ব্যাকওয়াটার্স কাকে বলে?
কেরালা রাজ্যের মালাবার উপকূলে বহু উপহ্রদ বা লেগুন আছে। এগুলিকে ব্যাকওয়াটার্স বলা হয়। এগুলোর স্থানীয় নাম কয়াল।
যেমন – ভেম্বানাদ, অষ্টমুদি, পোনমুড়ি কয়ার, পেম্বানাদ কয়াল ইত্যাদি।
ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি ও দীর্ঘতম হিমবাহের নাম কি?
ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি লাদাখ (4,300 মিটার) এবং
দীর্ঘতম হিমবাহের নাম সিয়াচেন(76 কিমি)।
ভারতের প্রাচীন ও নবীন ভঙ্গিল পর্বতের নাম লেখ।
ভারতের প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতের নাম আরাবল্লী পর্বত (1722 মিটার) এবং
ভারতের নবীন ভঙ্গিল পর্বতের নাম হিমালয় পর্বত (8848 মিটার)।
রান কাকে বলে?
গুজরাটের কচ্ছ উপদ্বীপের বিস্তীর্ণ, অগভীর লবণাক্ত জলাভূমিকে রান বলে। এর উত্তরভাগের নাম বৃহৎ রান এবং দক্ষিণ ভাগের নাম ক্ষুদ্র রান।
মরুস্থলী নাম কেন হয়েছে?
রাজস্থানের পশ্চিমবংশের বালুময়, শুষ্ক, রুক্ষ ও প্রায় জনবিরল মরু অঞ্চলটিকে মরুস্থলী বলার কারণ – মরু শব্দের অর্ধমৃত বা নিষ্প্রাণ এবং স্থলী শব্দের অর্থ দেশ বা ভূমি, অর্থাৎ মরুস্থলীর অর্থ মৃতের দেশ বা জল বা উদ্ভিদ হীন নিষ্প্রাণ স্থান। রাজস্থানের মরুস্থলী প্রায় জনশূন্য এবং বৃক্ষহীন একটি নিষ্প্রাণ ভূমি বা মরুভূমি, এজন্য অঞ্চলটিকে মরুস্থলী বলে।
ডেকান ট্রাপ কি?
দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর-পশ্চিম অংশ ডেকান ট্রাপ বা লাভা মালভূমি নামে পরিচিত। এই অঞ্চলটি লাভা শিলা দ্বারা গঠিত। ডেকানের অর্থ দাক্ষিণাত্য এবং ট্রাপ বলতে বোঝায় ধাপ বা সিঁড়ি। সমগ্র মালভূমিটি পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে নেমে গেছে। প্রায় ছয় কোটি থেকে 13 কোটি বছর আগে উত্তপ্ত তরল পদার্থ বা ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে কোনো বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে বিদারঅগ্ন্যুদগমের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে এসে লাভা প্রবাহ রূপে এই অঞ্চলটিকে ঢেকে ফেলে।তরল লাভা জমাট বেঁধে তৈরি হয়েছে বলে এই অঞ্চলটি সাধারণভাবে সমতল এবং পর্বতের চূড়া বা পাহাড়ের শীর্ষ দেশ গুলি চ্যাপ্টা। দীর্ঘদিন ধরে নদী ও অন্যান্য শক্তির ক্ষয় কার্যের ফলে ডেকান ট্রাপের বিভিন্ন অংশ ব্যবচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।