IISCO (Indian Iron and Steel Company) এবং HSL (Hindustan Steel Limited) সম্পর্কে টীকা এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
Read- ভারতের খনিজ সম্পদ সম্পর্কিত অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী।

IISCO (Indian Iron and Steel Company):
অবস্থান:
Indian Iron and Steel Company এর অন্তর্গত বার্নপুর কারখানা টি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের পশ্চিম দিকে এবং কুলটি কারখানাটি আসানসোলের উত্তর-পশ্চিম দিকে বরাকর নদীর তীরে অবস্থিত দুটি কারখানার গড়ে ওঠা সর্বপ্রধান কারণ আসানসোল জংশন।
নির্মাণকাল:
1874 সালে বেঙ্গল আয়রন ওয়ার্কস কোম্পানি কুলটিতে বরাকর আয়রন ওয়ার্কস কারখানাটি স্থাপন করে। 1918 সালে বার্নপুর IISCO স্থাপিত হয়। 1974সালে ভারত সরকার এই কারখানার দায়িত্বভার গ্রহণ করে।
লৌহ ইস্পাত গড়ে ওঠার কারণ:
1. আকরিক লোহা:
350 km এর মধ্যে গুয়া ও নোয়ামুন্ডি আকরিক লৌহক্ষেত্রগুলি অবস্থিত।
2. কয়লা:
এই কারখানাটির নিকটেই রাণীগঞ্জ, অন্ডাল, দিশেরগড় প্রভৃতি কয়লাক্ষেত্রের অবস্থান রয়েছে। এছাড়া ভারতের বৃহত্তম কয়লা খনি ঝরিয়া এই অঞ্চলের কাছেই অবস্থিত।
3. ম্যাঙ্গানিজ ও চুনাপাথর:
ওড়িশার বীরমিত্রপুর থেকে চুনাপাথর এবং গাংপুর থেকে ম্যাঙ্গানিজ সহজেই এখানে আনা হয়।
4. জলের সহজলভ্যতা:
দামোদর নদ এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রয়োজনমত জল পাওয়ার সুবিধা আছে।
5. বন্দর:
200 কিমির মধ্যে কলকাতা বন্দরের অবস্থান রয়েছে।
6. শ্রমিক:
বর্ধমান জেলার পশ্চিমাংশ ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণে শ্রমিক সুলভে পাওয়া যায়।
বৈশিষ্ট্য:
বার্নপুর ও কুলটি কারখানা দুটি আলাদা ভাবে গড়ে উঠলেও সামগ্রিকভাবে সম্পূরিত কারখানার মতো কাজ করে।
বিশেষত্ব:
কুলটি কারখানায় কেবল পিস আয়রন উৎপাদিত হয়। বার্নপুরে পিগ আয়রন, ইস্পাত উৎপাদিত হয়।
Read- ভারতের গন্ডোয়ানা ও টার্শিয়ারি যুগের কয়লাক্ষেত্রের অবস্থান লেখ।
HSL (Hindustan Steel Limited):
অবস্থান:
বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের দামোদর নদের তীরে ব্রিটেনের ‘ইসকন’ নামক এক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় এই লৌহ ইস্পাত কারখানাটি গড়ে ওঠে।
নির্মাণকাল:
1957 সালে জানুয়ারিতে কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়। 1959 সালে 13 টি ব্রিটিশ কোম্পানির একটি গোষ্ঠী ও ইসকনের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয় এবং 1962 সালে দুর্গাপুরের কারখানা উৎপাদন শুরু করে।
লৌহ ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার কারণ:
1. আকরিক লোহা:
এই কারখানার নিকটে ঝাড়খণ্ডের গুয়া ও নোয়ামুন্ডি, অভিসার কেওনঝড় জেলার বোলানি আকরিক লৌহাক্ষেত্রে ক্ষেত্র অবস্থান।
2. কয়লা:
১১০ কিলোমিটার এর মধ্যে রানীগঞ্জ ও ঝরিয়া কয়লা খনির অবস্থান।
3. চুনাপাথর ও ম্যাঙ্গানিজ:
370 কিমি এর মধ্যে বীরমিত্রপুরের চুনাপাথর এবং জমাদাতের ম্যাঙ্গানিজ ক্ষেত্রের অবস্থান রয়েছে।
4. জল:
দামোদর নদ এই অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রয়োজন মত জল পাওয়ার সুবিধা রয়েছে।
5. বাজার ও বন্দর:
দুর্গাপুর পূর্ব রেলপথ, গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড এবং দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত নৌ-পরিবহনযোগ্য খালের মাধ্যমে হুগলি শিল্পাঞ্চলের বিশাল বাজার ও কলকাতা বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত ও রপ্তানি করা এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করার বিশেষ সুবিধা হয়।
6. সুলভ শ্রমিক:
এই অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় দক্ষ, সুলভ, স্থানীয় শ্রমিক সুবিধা রয়েছে।
বিশেষত্ব:
ভারতের সর্বাধিক সংকর ইস্পাত দুর্গাপুর কারখানা থেকে উৎপন্ন হয়। জার্মানির রূঢ়ের সাথে তুলনা করে দুর্গাপুর কে ভারতের রূঢ় বলে।
This post was updated on 2023-02-22 17:56:57.