সম্পদের কার্যকারিতা এবং সংরক্ষণের পদ্ধতি সম্পর্কে এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
সম্পদের কার্যকারিতা:
বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে (1933 খ্রীস্টাব্দে) বিশিষ্ট সম্পদশাস্ত্রবিদ অধ্যাপক জিমারম্যান সম্পদের কার্যকারিতা সম্পর্কে তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন।
মূলকথা:
- কোনো বস্তু বা পদার্থের কার্যকারিতাই সম্পদ।
- মানবিক গুণ বা সাংস্কৃতিক কার্যাবলীর কার্যকরি ক্ষমতা আছে, তাই সংস্কৃতিও সম্পদ।
- সামাজিক দর্শন কার্যকরি সম্পদ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
- সাধারণত সম্পদ গতিশীল প্রকৃতির।
- সম্পদের পরিধি ব্যাপক।
বৈশিষ্ট্য:
- নিরপেক্ষ বস্তুকে যে সম্পদে পরিণত করা যায়, এই তত্ত্ব তার ব্যাখ্যা করে।
- প্রাকৃতিক সম্পদের যে কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা যায় তা এর মাধ্যমে জানা যায়।
- প্রতিটি সম্পদের একটি নিজস্ব আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য ও কার্যকারিতা আছে।
- সম্পদের বিনাশ আছে তাই সম্পদের সংরক্ষণ করা দরকার।
সম্পদ সংরক্ষণ:
অধ্যাপক জিমারম্যান এর মতে – ” সম্পদ সংরক্ষণের মূলতত্ত্ব হলো সম্পদের সৃষ্টি ও ব্যবহারের মধ্যে উপযুক্ত হার বজায় রাখা।”
প্রকৃতপক্ষে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজন মেটানোর জন্য বর্তমান সম্পদের যথোপযুক্ত ও নিয়মমাফিক ব্যবহারকে সম্পদ সংরক্ষণ বলা হয়।
সম্পদ সংরক্ষণের পদ্ধতি:
- সম্পদের ব্যবহারের বাহুল্যতা হ্রাস করে স্থায়িত্ব প্রদান করা।
- প্রচলিত সম্পদের পরিবর্তে অপ্রচলিত সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি করা।
- সম্পদ উৎপাদনকালীন অপচয় রোধ করা।
- প্রযুক্তির সাহায্যে সম্পদের ব্যবহারের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করে সম্পদের স্থায়িত্ব প্রদান করা।
- সম্পদের পুনঃসংস্থানের মাধ্যমে পরিবেশে সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
- সম্পদ সংরক্ষণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
- বিভিন্ন সরকারি নিয়ম ও আইন প্রণয়ন করে সম্পদ সংরক্ষণের মানসিকতা দৃঢ় করা।
- সম্পদ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প গ্রহণ করা।
✓ Phantom Pile বলতে কী বোঝো?
Phantom Pile কে কাল্পনিক সম্পদ বা কাল্পনিক স্তূপ বা কাল্পনিক সঞ্চয় বলে। Phantom Pile হলো সম্পদের গুণগত মান সম্পর্কে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক ধারণা বা উপলব্ধি। বস্তুত কোন সম্পদের প্রকৃত বা আসল পরিমাণ হ্রাস পেলেও ওই সম্পদের কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়ার ফলে মনে হয় যে সেই সম্পদের পরিমাণ কমেনি। Phantom Pile ধারণা আপেক্ষিক ও পরিবর্তনশীল।
সুত্রানুসারে – P = F*(O-L)
যেখানে, P = Phantom Pile, F = সম্পদের কার্যকারিতা যতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, O = সম্পদের প্রকৃত পরিমাণ, L = সম্পদের ব্যবহার জনিত হ্রাসের পরিমাণ।
উদাহরণ –
- যদি ধরা হয়, কোনো নির্দিষ্ট সম্পদের পরিমাণ 5000 টন (অর্থাৎ, সূত্রানুসারে 0)।
- ঐ সম্পদের ব্যবহারজনিত হ্রাসের পরিমাণ 1000 টন (অর্থাৎ, L)।
- সম্পদের কার্যকারিতা বৃদ্ধির পরিমাণ 5 গুণ (অর্থাৎ,F)।
সুতরাং, সূত্রানুসারে P = 5*(5000-1000)
= 5*4000
= 2000
সুতরাং, কাল্পনিক স্তূপ (P)= 2000 টন।