জলসংরক্ষন বলতে কী বোঝ ও জলসংরক্ষনের পদ্ধতিগুলি এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো। তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারো।

জলসংরক্ষন:
জলের দক্ষতা পূর্ণ ও পরিমিত সদ্ব্যবহারকে সাধারণভাবে জল সংরক্ষণ বলে অর্থাৎ জলের পরিমিত ও কাম্য ব্যবহার পুনর্ব ব্যবহার অপচয় নিবারণ অবৈজ্ঞানিক ও যথেচ্ছ ব্যবহার কমানো জলের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সঞ্চয় করে রাখাকে জল সংরক্ষণ বলে।
জলসংরক্ষনের পদ্ধতিগুলি:
জল সংরক্ষণের প্রধান দুটি পদ্ধতি হলো –
- জলবিভাজিকা উন্নয়ন ও
- বৃষ্টির জল সংরক্ষণ
জলবিভাজিকা উন্নয়ন:
a. ঢাল উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা:
আবহবিকার উঁচু অংশে ভূমিক্ষয় ও ধ্বস নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃক্ষ রোপণ ধাপ চাষ প্রবর্তন তৃণভূমির আচ্ছাদন তৈরি ঝুম চাষ নিষিদ্ধকরণ বিপদজনক ঢাল থেকে নদীর গতিপথ পরিবর্তন ধস প্রবল স্থানে ধারক দেয়াল নির্মাণ প্রভৃতি উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
b. বন্যা নিয়ন্ত্রণ:
বন্যাপ্রবণ নদী অববাহিকা অংশের জলাভূমি, পুকুর, খাল ও নদী খাতের পলি কেটে এগুলির জল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়।
c. খোয়াই নিয়ন্ত্রণ:
খোয়াই অঞ্চল বরাবর স্থানীয় উপাদানের সাহায্যে ছোট ছোট বাঁধ দিয়ে ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গাছ লাগিয়ে জল ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা যায়।
d. সমোন্নতি রেখা বরাবর বনভূমি গঠন:
ধাপ চাষ অঞ্চলে সমোন্নতি রেখা বরাবর বনভূমি স্থাপন করলে মৃত্তিকার ক্ষয় রোধ হয় এবং কৈশিক জল ভান্ডারের পরিমাণ বাড়ানো যায়।
e. নদী খাতে ছোট ছোট বাঁধ নির্মাণ:
ছোট নদী গুলিতে বাঁধ নির্মাণ করে স্থানীয়ভাবে অস্থায়ী জল সংরক্ষণ ও মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করা যায়।
f. বহুমুখী নদী পরিকল্পনা:
সমগ্র নদী অববাহিকায় সার্বিক উন্নতির জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জলসেচের প্রসার, মৎস্য চাষ, নৌ পরিবহন, সড়ক পরিবহন, ভূমিক্ষয় রোধ প্রভৃতি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রধান নদীতে বড় বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ প্রয়োজন।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণ পদ্ধতি:
a. ভূপৃষ্ঠের জলপ্রবাহকে আটকে রেখে:
প্রবাহমান জলকে বাঁধ দিয়ে আটকে রেখে জরাধার নির্মাণ করে তাকে ব্যবহার করা যায়। ওই জলাধারের জল কৃষিতে, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে, পানীয় জলের আধার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে জলের যোগান কিছুটা বাড়ে। একই সাথে ভৌমজলের স্তরও সমৃদ্ধ হয়।
b. বাড়ির ছাদে বৃষ্টির জল ধরে রেখে:
বৃষ্টির জল বাড়ির ছাদে পড়লে তাকে সংগ্রহ করে মাটির নীচে জলাধারে জমা করা যায়। অনেকগুলো জলাধার নির্মাণ করলে ওই জলাধারের জল সারা বছরই ব্যবহার করা যেতে পারে। জলকে যেমন গৃহস্থের কাজে লাগানো যায় তেমনি পরিশোধন করে পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত জলকে মাটির নিচে পাঠিয়ে দিয়ে ভৌম জলের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করা যায়।