ভারতের কৃষি সম্পর্কিত কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী।

ভারতের কৃষি সম্পর্কিত কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।

জীবিকা সত্ত্বাভিত্তিক কৃষিকার্য কাকে বলে?

যে প্রাচীনপন্থী কৃষি ব্যবস্থায়, কৃষিকাজ জীবন ধারণের একমাত্র উন্নত উপায় এবং যে কৃষি ব্যবস্থা অস্থায়ী এবং প্রগাঢ় কৃষির মধ্যে যোগসূত্র, সেই প্রায় প্রান্তিক ধরনের কৃষিকাজকে স্থায়ী আদিম জীবিকা সত্তাভিত্তিক কৃষি বলে।

শুষ্ক কৃষি বা ড্রাই ফার্মিং কাকে বলে?

পৃথিবীর যে সমস্ত অঞ্চলে বাৎসরিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পঞ্চাশ সেন্টিমিটারেরও কম সেই শুষ্ক পরিবেশে জলের সর্বযুগলের উপর নির্ভর করে যে কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয় তাকে শুষ্ক কৃষি বা ড্রাই ফার্মিং বলা হয়।

যেমন – গম, তুলা, ভুট্টা, ডাল ইত্যাদি শুষ্ক কৃষি ব্যবস্থার অন্যতম ফসল।

আর্দ্র কৃষি বা ওয়েট ফার্মিং কাকে বলে?

যে কৃষি ব্যবস্থায় শস্যের উৎপাদন প্রধানত বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভরশীল এবং জলসেচের সুযোগ ও প্রয়োজন সীমিত, সেই বারি নির্ভর কৃষি ব্যবস্থাকে আর্দ্র কৃষি বা ওয়েট ফার্মিং বলে।

যেমন – ধান, পাট, আখ ইত্যাদি আর্দ্র কৃষির ফসল। মৌসুমী জলবায়ুর অন্তর্গত ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, এছাড়া ইথিওপিয়া, জাম্বিয়া এবং এই ধরনের কৃষি ব্রাজিলের দক্ষিণাংশে দেখা যায়।

খারিপ শস্য কাকে বলে?

ভারতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু আসার সময় অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে যে সব চাষ শুরু হয় সেগুলিকে খারিপ শস্য বলে।

যেমন – ধান, আখ, তুলা, জোয়ার, বাজরা, ভুট্টা, শীতের শুষ্ক দিনে এইসব ফসল কাটা হয়।

রবিশস্য কাকে বলে?

শীতের শুরুতে সেসব শস্যের চাষ শুরু হয় সেগুলিকে রবিশস্য বলে।

যেমন – ধান, সরষে, ছোলা, যব, আলু এইসব ফসল বসন্তের শুরুতে কাটা হয়।

দোফসলী কৃষি কাকে বলে?

যে কৃষি ব্যবস্থায় অনুকূল পরিবেশে বছরে দুটি ফসল তোলা সম্ভব হয় সেই কৃষি বন্দোবস্ত Duo Culture নামে পরিচিত। ভারতীয় উপমহাদেশে বর্ষার প্রারম্ভে খারিপ ও শীতের গোড়ায় রবি চাষকে একসঙ্গে দোফসলী চাষ বলে।

বহুফসলী কৃষি বা Oligo Culture কাকে বলে?

যে কৃষি ব্যবস্থায় প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে একই জমি থেকে বছরে দুই এর বেশি বার ফসল তোলা হয়, তাকে বহুফসলী কৃষি বা Oligo Culture বলে।

বাগিচা কৃষি কাকে বলে?

সাধারণত ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে প্রচুর মূলধন, দক্ষ শ্রমিক, উন্নত পরিকাঠামো এবং ব্যবস্থাপনার সাহায্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যে রপ্তানি নির্ভর কৃষি ব্যবস্থায় বৃহৎ আয়তন জোতে একবার ফসল রোপণ করে বহুবার ফসল পাওয়া যায় সেই কৃষি ব্যবস্থাকে আবাদী বা বাগিচা কৃষি বলা হয়। এর প্রধান ফসল গুলি হল – চা, কোকো, কফি, রবার, নারকেল, কলা, তামাক, মশলা ইত্যাদি।

বৈশিষ্ট্য:

  • প্রধানত উষ্ণমন্ডলীয় দেশগুলিতে এই কৃষির বিকাশ ঘটেছে।
  • প্রচুর মূলধন ও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা প্রয়োজন।
  • উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক, সার, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি এবং প্রচুর সুলভ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
  • জমির উপর জনসংখ্যার চাপ কম এমন স্থানে এই কৃষির প্রচলন বেশি।

জায়িত শস্য কাকে বলে?

ভারতের শীতের শেষে, গ্ৰীষ্মকালে যেসব ফসলের চাষ করা হয় এবং বর্ষার আগে যেসব ফসল তোলা হয় তাদের জায়িত শস্য বলে। এই প্রকার কৃষি কিছুটা জলসেচ ও কালবৈশাখী জলের উপর নির্ভরশীল।

যেমন – আউশধান, বাদাম, পাট, শাক-সব্জি এই কৃষির ইত্যাদি ফসল।

শস্যাবর্তন বলতে কী বোঝো?

যে কৃষি ব্যবস্থায় একই জমিতে বিভিন্ন বছরে বা বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা হয়, তাকে শস্যাবর্তন বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • শস্যাবর্তনের মাধ্যমে মিশ্র কৃষিতে সারাবছর ফসল উৎপাদিত হয়।
  • এর মাধ্যমে জমির উর্বরতা বজায় রাখা সম্ভব।

সবুজ বিপ্লব বলতে কী বোঝো?

স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী সময়ে ভারতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ছয় দশকের শেষের দিক থেকে কৃষিকাজে অত্যন্ত আধুনিক পদ্ধতির প্রয়োগ শুরু হয়। যেমন – উচ্চ ফলনশীল বীজ বপন, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক দ্রব্য প্রয়োগ, ট্রাক্টর, হার্ভেস্টর প্রভৃতি আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি, জলসেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ প্রভৃতি। এইসব ব্যবস্থা গ্ৰহণ করার ফলে 1968 সাল থেকে 1978 সালের মধ্যে ভারতে বিশেষত পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় গম উৎপাদনে যে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে তাকে সবুজ বিপ্লব বলে। ভারতের সবুজ বিপ্লবের উদ্ভাবক ছিলেন Dr. S. Swaminathan।

নমস্কার , আমরা দেবলীনা ও শুভদীপ । আমি ওয়েবসাইটের লেখক, আমি ভূগোলে স্নাতক করেছি। আমার উদ্দেশ্য শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়ের জন্য ভূগোলের গুণমান নোট এবং উপাদান শেয়ার করা এবং আমার দিক থেকে সর্বোপরি সাথে থাকা।

Leave a Comment

error: Content is protected !!