টীকা লেখ – 1. সামাজিক বনসৃজন ও 2. কৃষি বনসৃজন এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো। তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারো।

1. সামাজিক বনসৃজন:
সংঞ্জা:
নির্ধারিত অরণ্য সীমার বাইরে অব্যবহিত বা পতিত জমি সংরক্ষণ করেঅনুন্নত মানব গোষ্ঠী বা দরিদ্র অধিবাসীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে যখন অরণ্যভূমি বা বনভূমির বিকাশ ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয় তখন সেই উদ্যোগকে সামাজিক বনসৃজন বলে।
শাহের মতে গ্রামীণ জনগণের চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে যেকোনো সংস্থার মাধ্যমে যেকোনো ধরনের জমিতে বৃক্ষরোপণের উদ্যোগকে সামাজিক বনসৃজন বলে।
সামাজিক বনসৃজন এর লক্ষ্য:
সামাজিক বনসৃজন হল প্রকৃতপক্ষে একটি বহু উদ্দেশ্য সাধক প্রকল্প এর উদ্দেশ্য গুলি হল –
- পতিত ও পরিত্যক্ত বা অব্যবহৃত জমিকে ব্যবহার করা।
- মিশ্র বনভূমি সৃষ্টির মাধ্যমে দরিদ্র ও অনুন্নত অধিবাসীদের ফলমূল, জ্বালানি কাঠ প্রভৃতি জোগানের দ্বারা তাদের আয় বৃদ্ধি করন।
- সর্বাধিক বনভূমির উপর চাপ কমানো।
- কৃষিজাত জমির আশেপাশে অব্যবহৃত জমিতে বনভূমি সৃষ্টি করা।
- ভূমিক্ষয় জনিত সমস্যা রোধ করা।
- মাটি ও জল সংরক্ষণ করা।
- দূষণ প্রতিরোধ করা।
- মাটিতে জৈব সারের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
- পশু খাদ্যের যোগান বৃদ্ধি করা।
সামাজিক বনসৃজনের উপযুক্ত গাছ:
সামাজিক বনসৃজন এর উদ্দেশ্যে মহুয়া, কুসুম, বট, নারকেল, ইউক্যালিপটাস, বাঁশ, সাবু প্রভৃতি গাছ লাগানো যায়।
2. কৃষি বনসৃজন:
সংজ্ঞা:
কৃষিকার্যের পাশাপাশি কৃষক যখন তার কৃষি জমির পাশে পতিত জমিতে, বাড়ি সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় কাঠ, জৈব সার, ফলমূল, বনৌষধি প্রভৃতি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গাছ লাগিয়ে বনভূমি গড়ে তোলে, তখন সেই কাজকেই কৃষি বনসৃজন বলে।
কৃষি বনসৃজনের উদ্দেশ্য:
- অব্যবহৃত বা পতিত জমি কে উৎপাদনশীল করে তোলা।
- ভূমিক্ষয় প্রতিরোধ করা।
- জমিতে জৈব সারের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।
- কাঠ, ফলমূল প্রভৃতি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষক ও তার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার বিকাশ ঘটানো।
- ভেষজ গাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
- প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র্য বজায় রাখা।
- পশু খাদ্যের যোগান ও জ্বালানি কাঠের জোগান বৃদ্ধি করা।
কৃষি বনসৃজনের প্রধান প্রধান বৃক্ষসমূহ:
কৃষি ও পরমাণু সিজনের উপযুক্ত গাছ গুলি হল ইউক্যালিপটাস আকাশমনি নিম সুপারি তাল মেহগনি শিশু ইত্যাদি।
কৃষি বনসৃজন এর অসুবিধা:
- কৃষি বনভূমি গড়ে তোলার জন্য অনেক সময় লাগে। ফলে কৃষকের তাৎক্ষণিক লাভের সুযোগ কম।
- সঠিক প্রজাতির গাছ বাছাই না করা হলে জমি ছায়াঘন হয়ে পড়ে, ফলে স্বাভাবিক কৃষিকাজ ব্যাহত হয়।
- পাহাড়ি অঞ্চলে রিপি গাছের ঝরা পাতা মাটিতে অম্লের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।