দুর্যোগ ও বিপর্যয় সম্পর্কিত কিছু অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী।

দুর্যোগ ও বিপর্যয় সম্পর্কিত কিছু অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো। তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারো।

Read- সম্পদ বলতে কী বোঝো? সম্পদের শ্রেণীবিভাগ কর।

দুর্যোগ ও বিপর্যয় সম্পর্কিত কিছু অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নাবলী।

দুর্যোগ কাকে বলে?

প্রাকৃতিক অথবা মানুষের ক্রিয়া-কলাপের জন্য যেসব চরম ঘটনাবলি মানুষের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে বাধা সৃষ্টি করে তার দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন ঘটায়, তাকে দুর্যোগ বলে।

দুর্যোগ শব্দের উৎপত্তি কোথা থেকে?

প্রাচীন অ্যাংলো ফরাসি শব্দ ‘hazard’ থেকে ইংরেজিতে এই ‘hazard’ শব্দটি এসেছে এবং এরই বাংলা প্রতিশব্দ হলো দুর্যোগ।

দুর্যোগ কত প্রকার ও কি কি?

দুর্যোগ প্রধানত তিন প্রকার। যথা – প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ এবং আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের উদাহরণ লেখ।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের উদাহরণ হল – ভূমিকম্প, সুনামি, অগ্নুৎপাত, ঘূর্ণিঝড়, হিমানী সম্প্রপাত প্রভৃতি।

মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের উদাহরণ লেখ।

মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগের উদাহরণ হল – রাসায়নিক দুর্ঘটনা, শিল্প দূর্ঘটনা, পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ইত্যাদি।

আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগের উদাহরণ লেখ।

আধা-প্রাকৃতিক দুর্যোগের উদাহরণ হল – নদী পাড় ভাঙ্গন, ভূমিধস, ভূমিক্ষয়, দাবানল, খরা প্রভৃতি।

Read- পশ্চিমবঙ্গের চা চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।

ভূমিকম্পের দেশ কাকে বলে?

জাপানকে ভূমিকম্পের দেশ বলে।

বন্যার অন্যতম প্রাকৃতিক কারণ কোনটি?

অতিবৃষ্টি বন্যার অন্যতম প্রাকৃতিক কারণ।

পৃথিবীর মোট ভৌগোলিক অঞ্চলের কত শতাংশ বন্যাপ্রবণ?

পৃথিবীর মোট ভৌগলিক অঞ্চলের 14% বন্যাপ্রবণ।

ভারতের একটি বন্যা প্রবণ অঞ্চলের নাম লেখ।

ভারতের একটি বন্যা প্রবণ অঞ্চলের নাম হল উপহিমালয় অঞ্চল এবং গঙ্গার সমভূমি (উত্তর প্রদেশ, বিহারের গোমতী, ঘর্ঘরা, কোশী, যমুনা, চম্বল প্রকৃতির নদীসংলগ্ন এলাকা)।

ভারতের একটি ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের নাম লেখ।

ভারতের একটি ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের নাম হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল।

কোন যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপ করা হয়?

সিসমোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে ভূমিকম্পের মাত্রা পরিমাপ করা হয়।

ভূমিকম্পের দুটি প্রাকৃতিক কারণ লেখ।

ভূমিকম্পের দুটি প্রাকৃতিক কারণ হল – নবীন ভঙ্গিল পর্বতের উত্থান ও আগ্নেয়গিরি জনিত কারণ।

ভূমিকম্পের দুটি কৃত্রিম কারণ লেখ।

ভূমিকম্পের দুটি কৃত্রিম কারণ হল – জলাধর নির্মাণ ও পারমাণবিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

পশ্চিমবঙ্গের ধসপ্রবণ জেলা কোনটি?

দার্জিলিং জেলা পশ্চিমবঙ্গের ধসপ্রবন জেলা।

ভূমিধসের কয়েকটি কারণ লেখ।

ভূমিধসের কয়েকটি কারণ হল – অধিক বৃষ্টিপাত, দুর্বল শিলা, অনাবৃত ভূ-ভাগ, দুর্বল পাহাড়ি ঢাল।

বিপর্যয় কাকে বলে?

যখন কোন দুর্যোগ চরম আকার নিয়ে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে, তখন তাকে বিপর্যয় বা ডিজাস্টার নামে অভিহিত করা হয়।

‘Disaster’ শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে?

‘Disater’ শব্দটির উৎপত্তি ফরাসি শব্দ ‘Desastre’ থেকে।

ডিজাস্টার কত প্রকার ও কি কি?

ডিজাস্টার প্রধানত দুই প্রকার। যথা – প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও মনুষ্য সৃষ্ট বিপর্যয়।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় কত প্রকার ও কি কি উদাহরণসহ লেখ।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় মূলত পাঁচ প্রকার। যথা –

1. ভূতাত্ত্বিক বিপর্যয়। উদাহরণ – ভূমিকম্প, সুনামি, অগ্নুৎপাত।

2. ভূমিরূপ সংক্রান্ত বিপর্যয়। উদাহরণ – ভূমিধস, নদী পাড় ভাঙ্গন।

3. বায়ুমণ্ডলের বিপর্যয়। উদাহরণ – ঘূর্ণিঝড়, হিমানী সম্প্রপাত, তুষারঝড়।

4. জল সংক্রান্ত বিপর্যয়। উদাহরণ – বন্যা, খরা।

5. অরণ্য সংক্রান্ত বিপর্যয়। উদাহরণ – দাবানল।

মনুষ্য সৃষ্টি বিপর্যয় কত প্রকার ও কি কি উদাহরণসহ লেখ।

মনুষ্য সৃষ্ট বিপর্যয় মূলত চার প্রকার। যথা –

1. প্রযুক্তিগত বিপর্যয়। উদাহরণ – শিল্প সংক্রান্ত, রাসায়নিক দ্রব্য সংক্রান্ত।

2. যুদ্ধবিগ্রহ। উদাহরণ – মধ্য-প্রাচ্যের যুদ্ধ।

3. অর্থনৈতিক বিপর্যয়। উদাহরণ – আর্থিক মন্দা।

4. জৈবিক বিপর্যয়। উদাহরণ – কলেরা ইবোলা জ্বর।

ভারতে ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট’ কত সালে চালু হয়?

ভারতে ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট’ 2005 সালে চালু হয়।

ব্লিজার্ড বা তুষারঝড় কাকে বলে?

সূক্ষ্ম তুষার কণাবাহী অতি বেগবান বায়ুপ্রবাহকে ব্লিজার্ড বা তুষারঝড় বলে।

রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা কত অতিক্রম করলে তা চরম বিপর্যয় ঘটায়?

রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা 7.0 অতিক্রম করলে তার চরম বিপর্যয় ঘটায়।

‘বিপর্যয় লঘুকরণ দিবস’ কোন দিনটিকে বলা হয়?

10th October দিনটিকে ‘বিপর্যয় লঘুকরণ দিবস’ বলা হয়।

ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা কবে হয়েছিল?

1984 সালের 3 ডিসেম্বর ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা হয়েছিল।

সুনামি কাকে বলে?

সমুদ্রের তলদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে সমুদ্রে যে বড় বড় ঢেউ সৃষ্টি হয় তাকে সুনামি বলে।

‘Tsunami’ কোন দেশের শব্দ?

Tsunami জাপানের শব্দ।

সুনামির কারণ লেখ।

সমুদ্র গর্ভে সৃষ্ট ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে 7.0 বা তার বেশি হলে বৃত্তাকার তরঙ্গ উলম্বভাবে চারিদিকে বিস্তারের মাধ্যমে সুনামি সৃষ্টি করে। যেমন – 2004 এর 26 শে ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার উপকূল সংলগ্ন ভারত মহাসাগরের তলদেশে প্রবল ভূমিকম্পের ফলে সুনামি সৃষ্টি হয়।

ভারতে ‘কেন্দ্রীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরিষদ’ কত সালে গঠিত হয়?

ভারতে ‘কেন্দ্রীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ পরিষদ’ 1954 সালে গঠিত হয়।

জলবায়ুগত বিপর্যয়ের পূর্বাভাস কিসের মাধ্যমে দেওয়া হয়?

উপগ্ৰহের সাহায্যে জলবায়ুগত বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়।

পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের নাম কি?

পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের নাম টর্নেডো।

পৃথিবীতে সুনামি সতর্কতা পদ্ধতিটির নাম কি?

পৃথিবীতে সুনামি সতর্কতা পদ্ধতিটির নাম হল – Deep-ocean Assessment and Reporting of Tsunami (DART)।

Read- আকরিক লোহার গুরুত্ব ও ব্যবহার লেখ।

খরা কাকে বলে?

ভারতীয় আবহগত বিভাগ (Indian Meteorological Department) এর সংজ্ঞা অনুসারে কোন অঞ্চলের গড় বাৎসরিক বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় ৭৫% কম হলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে খরা বলে।

খরার শ্রেণীবিভাগ কর।

খরকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – জলবায়ুগত খারাপ বৃষ্টিগত খরা জল সংক্রান্ত খরা আর্থসামাজিক খরা।

খরার দুটি প্রাকৃতিক কারণ লেখ।

খরার দুটি প্রাকৃতিক কারণ হলো – 1.আবহাওয়া ও জলবায়ুগত প্রভাব।

2. বৃষ্টিপাতের অনিশ্চয়তা।

খরার দুটি মনুষ্যসৃষ্ট কারণ লেখ।

খরার দুটি মনুষ্যসৃষ্ট কারণ হল – 1. বৃক্ষচ্ছেদন।

2. অতিনগরায়ন।

ভারতের কয়েকটি খরাপ্রবণ অঞ্চলের নাম লেখ।

ভারতের কয়েকটি খরাপ্রবন অঞ্চলের নাম হল –

1. পশ্চিম রাজস্থানের জয়শলমীর, চুরু, গঙ্গানগর।

2. গুজরাটের কচ্ছ-সৌরাষ্ট্র অঞ্চল।

3. পশ্চিমঘাট পর্বতের বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলের অন্তর্গত মহারাষ্ট্রের পূর্ব ও দক্ষিণ অংশ, কর্ণাটকের উত্তর অংশ এবং তেলেঙ্গানার পশ্চিমাংশ।

হিমানী সম্প্রপাত কি?

শীত প্রধান অঞ্চলে পার্বত্য ভূমিতে পর্বতের উপরিভাগ থেকে যখন বিশাল আকৃতির বরফের স্তুপ হঠাতে প্রবল বেগে নীচে নেমে আসে সেই ঘটনাকে বলে হিমানী সম্প্রপাত।

হিমানী সম্প্রপাতের কয়েকটি কারণ লেখ।

শিবানী সম্প্রপাতের কয়েকটি কারণ হল – ভূমিকম্প, অতিরিক্ত তুষারপাত, অধিক বরফ গলন, উষ্ণতা বৃদ্ধি।

This post was updated on 2023-02-22 17:57:14.

নমস্কার , আমরা দেবলীনা ও শুভদীপ । আমি ওয়েবসাইটের লেখক, আমি ভূগোলে স্নাতক করেছি। আমার উদ্দেশ্য শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়ের জন্য ভূগোলের গুণমান নোট এবং উপাদান শেয়ার করা এবং আমার দিক থেকে সর্বোপরি সাথে থাকা।

Leave a Comment

error: Content is protected !!