GPS বলতে কি বোঝো এবং এর ব্যবহার এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
GPS:
GPS এর পুরো কথাটি হল Global Positioning System। এটি কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ন্ত্রিত বিশ্বব্যাপী অবস্থান নির্ণায়ক একটি বিশেষ রেডিও মাধ্যম, যার দ্বারা পৃথিবীপৃষ্ঠের উপর কোন স্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমা নির্ণয়ের মাধ্যমে সঠিক অবস্থার নির্ণয় করা যায়।
GPS এর মূল অংশ হচ্ছে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণরত 24 টি কৃত্রিম উপগ্রহ এবং ভূপৃষ্ঠে থাকা GPS রিসিভার বা গ্রাহক যন্ত্র, যা কৃত্রিম উপগ্রহের সিগন্যাল বা সংকেত থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 20 হাজার কিলোমিটার ওপরে 6টি নির্দিষ্ট কক্ষপথে 24 টি কৃত্রিম উপগ্রহ প্রতি 24 ঘন্টায় দুবার করে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে।
✓ ভারতের IRNSS (Indian Regional Navigation Satellite System) GPS ব্যবহৃত হয়।
✓ Bradford Parkinson কে GPS এর জনক বলা হয়।
GPS এর ব্যবহার:
বর্তমানে পৃথিবীতে কৃত্রিম উপগ্রহের কার্যপ্রণালী যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে জিপিএস এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। যেমন –
a. প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়:
আধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিভিন্ন দেশের সেনাবাহিনীর কাছে GPS একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম। GPS এর সাহায্যে বিমান, জাহাজ, স্থলভাগে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিমূলক হাতিয়ার এর ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে।
b. জরিপ কার্যে:
বর্তমানে পৃথিবীর কোনো অঞ্চলকে জরিপ করার জন্য এই পরিসেবা ব্যবহার করা হয়। শহর পরিকল্পনা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং জরিপ কাজে GPS প্রযুক্তি বিশেষভাবে ব্যবহার হচ্ছে। মৌজা মানচিত্রে সীমানা নির্ধারণে GPS প্রযুক্তি এক দক্ষ যন্ত্র হিসেবে কাজ করে।
c. যানবাহন সংক্রান্ত তথ্য:
জাহাজ, বিমান এমনকি সড়কপথে এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যে কোনো যানের সঠিক দিশা, অবস্থান নির্ণয় করা যায়। এমনকি জাহাজ ও বিমান দুর্ঘটনা গ্রস্থ বা নিখোঁজ হয়ে গেলে তাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যে জিপিএস পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
d. সঠিক অবস্থান নির্ণয়:
GPS এর মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের যে কোন স্থানের অক্ষাংশ, দ্রাঘিমা, উচ্চতা সহজে পরিমাপ করা যায়। GPS একজন পর্যটকের বিশ্বস্ত গাইড হিসেবে কাজ করে। GIS এর সাহায্যে গ্রাহক পর্যটককে নির্ভুল ভাবে পথ দেখাতে সাহায্য করে।
e. ম্যাপ প্রস্তুতিতে:
উপগ্রহ চিত্রের দ্বারা মানচিত্র প্রস্তুতিতে আজকাল GOS পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
f. আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য প্রদান:
বায়ুমণ্ডলের আবহাওয়া বিভিন্ন অবস্থা, যেমন – ঝড়,বৃষ্টি, তুষারপাত সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দ্রুত আহরণ করতে GPS পরিসেবার সাহায্য নেওয়া হয়।
g. দুর্গত এলাকা পরিদর্শন:
এই পরিসেবার মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো দুর্গত অঞ্চল পরিদর্শন ও সেখানে দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যায়।
This post was updated on 2023-02-22 17:56:43.