বিপর্যয় পরবর্তী পর্যায়ে গ্ৰহনীয় পদক্ষেপগুলি লেখ।

বিপর্যয় পরবর্তী পর্যায়ে গ্ৰহনীয় পদক্ষেপগুলি এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।

ভূমিকা:

বিপর্যয় কবলিত মানুষদের দ্রুত মুক্তির জন্য এবং তাদের স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বিপর্যয় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্ৰহন করা ভীষনভাবে জরুরি। যেমন –

ত্রাণ সরবরাহ:

বিপর্যয় কবলিত এলাকায় খুব দ্রুত ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে হয়। কারণ এর মাধ্যমেই বিপর্যয়ের ধ্বংসলীলা থেকে মানুষ অনেকাংশেই মুক্তি পায়। ত্রাণ সরবরাহে বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন –

a. সরকারি ভূমিকা:

প্রাথমিক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি মন্ত্রক বিপর্যয় মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারের সমন্বয়ের মাধ্যমে বিপর্যস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে যায়।

b. স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ভূমিকা:

সরকারি সংস্থা ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (ক্লাব, সংগঠন) ত্রাণকার্যে বিশেষ ভূমিকা নেয়। এই সংস্থাগুলি বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্ৰহ করে বিপর্যয় কবলিত এলাকায় মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করে।

c. পরিকল্পনাকারীর ভূমিকা:

উপযুক্ত পরিকল্পনা গ্ৰহণের মাধ্যমে বিপর্যস্ত এলাকার মানুষদের ত্রাণ সরবরাহ করা যায়। এখানে পরিকল্পনাকারী সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে চলে। তবে পরিকল্পনাকারীকে অবশ্যই সৎ, নিষ্ঠাবান ও দক্ষ হতে হয়।

উদ্ধারকার্য:

a. সরকারি ভূমিকা:

উদ্ধারকার্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

1. জেলাপ্রশাসনের ভূমিকা:

জেলাপ্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও কর্মকর্তারা প্রথমে একগুচ্ছ পরিকল্পনা গ্ৰহণ করে। যেমন –

  • জেলাস্তরে কন্ট্রোল রুম গঠন।
  • প্রয়োজনবোধে সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়া।
  • মৃত মানুষ ও প্রাণীদের সৎকারের ব্যবস্থা করা।
  • চিকিৎসা পরিষেবার জন্য স্বাস্থ্যশিবির গঠন।
  • মহামারি প্রতিরোধে ব্যবস্থা করা।
  • সড়ক, সেতু ও যোগাযোগ ব্যবস্থার , বিদ্যুৎ পুনগর্ঠন।
  • B.D.O. এর নিয়মিত তদারকি ও পর্যবেক্ষণ।
  • আর্থসামাজিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য উপযুক্ত রূপরেখা গঠন।
  • ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্ৰহ করে তার বিশ্লেষণ।
  • জনসংযোগ বৃদ্ধি।

2. সেনাবাহিনীর ভূমিকা:

দুর্গত রাজ্যের মুখ্যসচিব কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়া। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সেনাবাহিনী দ্রুত উদ্ধার সক্ষম হয়।

b. স্বেচ্ছাসেবীদের ভূমিকা:

বিপর্যয় পরবর্তী সময়ে উদ্ধারকার্যে স্বেচ্ছাসেবীদের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না। স্বেচ্ছাসেবীরা যেসব সাহায্য করতে পারেন –

  • পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা,
  • খাদ্য সরবরাহ,
  • ওষুধ সরবরাহ,
  • প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান,
  • কার্যকর পুষ্টিখাদ্যের সংহস্থান,
  • মহামারি প্রতিরোধ।

c. যোগাযোগ ব্যবস্থার ভূমিকা:

পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি করা দরকার।

  • টেলিফোন ও মোবাইল ব্যবস্থা।
  • ওয়ারলেস সেট।
  • উপগ্ৰহ যোগাযোগ।
  • বেতার দূরদর্শন।
  • সতর্কবাণী প্রচার।
  • সাইরেন ও ঘন্টা।

ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা বা GIS (Geographical Information System) মারফত তথ্য কাজে লাগিয়ে বিপর্যয়ের মানচিত্র প্রস্তুত।

d. সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা:

বিভিন্ন প্রকার সংবাদ মাধ্যম যেমন – বেতার, দূরদর্শন, খবরের কাগজ ইত্যাদি উদ্ধারকার্যে সাহায্য করে থাকে।

পুনর্বাসন:

বিপর্যয় পরবর্তী পর্যায়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকারি, বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই বিষয়ে ভূমিকা পালন করে।

নমস্কার , আমরা দেবলীনা ও শুভদীপ । আমি ওয়েবসাইটের লেখক, আমি ভূগোলে স্নাতক করেছি। আমার উদ্দেশ্য শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়ের জন্য ভূগোলের গুণমান নোট এবং উপাদান শেয়ার করা এবং আমার দিক থেকে সর্বোপরি সাথে থাকা।

Leave a Comment

error: Content is protected !!