পার্থক্য লেখ: আবর্তন গতি ও পরিক্রমণ গতি, সৌর দিন ও নক্ষত্র দিন, কর্কটসংক্রান্তি ও মকরসংক্রান্তি এবং মহাবিষুব ও জলবিষুব।

আবর্তন গতি ও পরিক্রমণ গতি, সৌর দিন ও নক্ষত্র দিন, কর্কটসংক্রান্তি ও মকরসংক্রান্তি এবং মহাবিষুব ও জলবিষুব এর পার্থক্য এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।

আবর্তন গতি ও পরিক্রমণ গতির পার্থক্য:

ভিত্তিআবর্তন গতিপরিক্রমণ গতি
সংজ্ঞাপৃথিবীর নিজ অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘোরাকে আবর্তন বা আহ্নিক গতি বলে।পৃথিবীর সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরাকে পরিক্রমণ বা বার্ষিক গতি বলে।
সময়কালআবর্তনের সময়কাল 23 ঘন্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড বা প্রায় 24 ঘন্টা। পরিক্রমণের সময়কাল 365 দিন 5 ঘন্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 365 দিন।
গতিবেগআবর্তন গতিবেগ নিরক্ষরেখায় সবচেয়ে বেশি, উভয় মেরুতে শূন্য।অনুসূর অবস্থানে পরিক্রমণের গতি বাড়ে, অপসূর অবস্থানে গতি কমে। গড় পরিক্রমণ বেগ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় 30 কিমি।
আপাত গতিপ্রতিদিন পূর্ব দিকে উদিত হওয়ার এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যাওয়াকে সূর্যের আপাত দৈনিক গতি বলে।সারাবছর কর্কটক্রান্তি থেকে মকরক্রান্তি রেখার মধ্যে লম্বা সূর্যরশ্মির পতনকে সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বলে।
ফলাফলদিনরাত্রি সংঘটিত হয়, জোয়ার ভাটা হয়, পৃথিবীতে জীবজগতের সৃষ্টি হয় ইত্যাদি।সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ণ হয়, ঋতু পরিবর্তন হয়, মেরু প্রভার সৃষ্টি হয় ইত্যাদি।

সৌর দিন ও নক্ষত্র দিনের পার্থক্য:

ভিত্তিসৌর দিননক্ষত্র দিন
আবর্তনসূর্যের সাপেক্ষে পৃথিবী আবর্তিত হয়।অন্য কোনো নক্ষত্রের সাপেক্ষে পৃথিবী আবর্তিত হয়
সময়24 ঘন্টা সময়ে পৃথিবীর এক সৌর দিন হয়।23 ঘন্টা 56 মিনিট 4 সেকেন্ড সময়ে পৃথিবীর এক নক্ষত্র দিন হয়।
ব্যবধাননক্ষত্র দিন অপেক্ষা সৌর দিন 3 মিনিট 56 সেকেন্ড বড়ো।সৌর দিন অপেক্ষা নক্ষত্র দিন 3 মিনিট 56 সেকেন্ড ছোটো।
পরিবর্তনআবর্তন বেগ হ্রাস বৃদ্ধির সাথে সৌর দিন হ্রাস বৃদ্ধি পায়।নক্ষত্র দিনের সময় স্থির বা অপরিবর্তিত থাকে।

কর্কটসংক্রান্তি ও মকরসংক্রান্তির পার্থক্য:

ভিত্তিকর্কটসংক্রান্তিমকরসংক্রান্তি
নামকরণকর্কটক্রান্তি রেখায় 21 শে জুন সূর্যের উত্তরায়নের শেষ সীমা হওয়ায় এই তারিখকে কর্কটসংক্রান্তি বলে।মকরক্রান্তি রেখায় 22 ডিসেম্বর সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ সীমা হওয়ায় এই তারিখকে মকরসংক্রান্তি বলে।
সূর্যরশ্মির পতনকোণকর্কটক্রান্তি রেখায় সূর্যরশ্মি 90° কোণে, মকরক্রান্তি রেখায় 43° কোণে পতিত হয়।মকরক্রান্তি রেখায় সূর্যরশ্মি 90° কোণে, কর্কট-ক্রান্তি রেখায় 43° কোণে পতিত হয়।
বিরাজমান ঋতুউত্তর গোলার্ধে গ্ৰীষ্মকাল, দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল বিরাজ করে।উত্তর গোলার্ধে শীতকাল, দক্ষিণ গোলার্ধে গ্ৰীষ্মকাল বিরাজ করে।
দিনরাতের দৈর্ঘ্যউত্তর গোলার্ধে দিন বড়ো, রাত ছোটো হয়। দক্ষিণ গোলার্ধে দিন ছোটো, রাত বড়ো হয়।দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড়ো, রাত ছোটো হয়। উত্তর গোলার্ধে দিন ছোটো রাত বড়ো হয়।

মহাবিষুব ও জলবিষুব এর পার্থক্য:

ভিত্তিমহাবিষুবজলবিষুব
নামকরণউত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল থাকায় 21 শে মার্চ তারিখকে বসন্ত বিষুব বা মহাবিষুব বলে।উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল থাকায় 23 শে সেপ্টেম্বর তারিখকে শারদ বিষুব বা জলবিষুব বলে।
বিরাজমান ঋতুউত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎকাল বিরাজ করে।উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল বিরাজ করে।
লম্বরশ্মি প্রাপ্তি21 শে মার্চের পর উত্তর গোলার্ধে সূর্যের লম্বরশ্মি পেতে শুরু করে।23 সেপ্টেম্বরের পর দক্ষিণ গোলার্ধে লম্বা সূর্যরশ্মি পায়।

FAQ/বহুচর্চিত প্রশ্নাবলী

অধিবর্ষ বা লিপইয়ার কাকে বলে?

৪ দ্বারা বিভাজ্য সাল এবং কোনো সালের শেষের দুটো অঙ্ক শূন্য থাকা সাল ৪০০ দ্বারা বিভাজিত হলে সেই বর্ষকে অধিবর্ষ বা লিপইয়ার বলে।

রবিমার্গ কাকে বলে?

সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি দেখা যায় উত্তর থেকে দক্ষিণে দুই ক্রান্তিরেখার মধ্যে, একে রবিমার্গ বলে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!