ক্যালসিফিকেশন ও হিউমিফিকেশন, মৃত্তিকার গঠন ও মৃত্তিকার গ্ৰথন, এলুভিয়েশন ও ইলুভিয়েশন এর পার্থক্য এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।
ক্যালসিফিকেশন ও হিউমিফিকেশন এর পার্থক্য:
বিষয় | ক্যালসিফিকেশন | হিউমিফিকেশন |
প্রকৃতি | এটি মৃত্তিকা গঠনের সুনির্দিষ্ট বা বিশেষ প্রক্রিয়া। | এটি মৃত্তিকা গঠনের মৌলিক প্রক্রিয়া। |
গঠন | সরল প্রকৃতির রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা গঠিত। | হিউমাস জটিল পদার্থ দ্বারা গঠিত। |
রাসায়নিক ধর্ম | মৃত্তিকা ক্ষারধর্মী হয়। | মৃত্তিকা অম্লধর্মী হয়। |
স্তর | A ও B স্তর গড়ে ওঠে। | জৈব পদার্থ স্তরে গঠিত হয়। |
সম্পাদিত স্থান | নাতিশীতোষ্ণ তৃণ অঞ্চলে সম্পাদিত হয়। | আর্দ্র ক্রান্তীয় অঞ্চলে সম্পাদিত হয়। |
উপযোগিতা | মৃত্তিকা জৈব সারের যোগান দেয়। | হিউমাস মৃত্তিকা উদ্ভিদের খাদ্য বৃদ্ধি করে। |
মৃত্তিকার গঠন ও গ্রথনের মধ্যে পার্থক্য:
বিষয় | মৃত্তিকার গঠন | মৃত্তিকার গ্ৰথন |
সংজ্ঞা | মৃত্তিকার কণাগুলির পরস্পর সজ্জারীতির মাধ্যমে যে বিন্যাস তৈরি হয়, তাকে মৃত্তিকার গঠন বলে। | মৃত্তিকার খনিজ কণাগুলির আপেক্ষিক অনুপাতকে মৃত্তিকার গ্ৰথন বলে। |
শ্রেণীবিভাগ | এটি চার প্রকার। যথা – a. পাতের ন্যায়, b. প্রিজমের ন্যায়, c. ব্লকের ন্যায়, d. দানার ন্যায়। | এটি তিন প্রকার। যথা – a. বালিময়, b. পলিময়, c. কাদাময়। |
স্থায়িত্ব | মৃত্তিকার গঠন স্থায়ী নয়। | মৃত্তিকার গ্ৰথন স্থায়ী। |
শনাক্তকরণ | ইহা শনাক্ত করা কঠিন। | ইহা শনাক্ত করা সহজ। |
সৃষ্টির প্রক্রিয়া | ধৌত ও জৈবিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। | রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। |
কৃষিকাজ | খন্ডাকৃতি ও কোণাকৃতি জাতীয় গঠন কৃষিকাজের উপযোগী। | দোয়াশ, পলি ও বেলে-দোয়াশ জাতীয় মৃত্তিকার গ্ৰথন কৃষিপোযোগী। |
এলুভিয়েশন ও ইলুভিয়েশন এর পার্থক্য:
বিষয় | এলুভিয়েশন | ইলুভিয়েশন |
সংজ্ঞা | মৃত্তিকার ওপরের স্তর থেকে খনিজ ও জৈব পদার্থের অপসারণকে এলুভিয়েশন বলে। | মৃত্তিকার খনিজ ও জৈব পদার্থের অপসৃত অংশসমূহের অধঃস্তরে সঞ্চয় হওয়াকে ইলুভিয়েশন বলে। |
অবস্থান | মাটির ওপরের স্তরে সংগঠিত হয়। | মাটির অধঃস্তরে ঘটে। |
স্তর গঠন | এই প্রক্রিয়ার দ্বারা A স্তর বা হরাইজন গঠিত হয়। | এই প্রক্রিয়ার দ্বারা মৃত্তিকার B স্তর গঠিত হয়। |
সংঘটন পদ্ধতি | যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে এই প্রক্রিয়াটি সংগঠিত হয়। | ইলুভিয়েশন প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য মূলত এলুভিয়েশন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে। |
অপসারণ ও সঞ্চয়ের ভিত্তি | ধৌত প্রক্রিয়ায় মাটির | |
খনিজের ভিত্তিতে রং | মাটিতে ওপরের স্তরে খনিজ মৌল থাকে না তাই এর বর্ণ ধূসর বা হালকা বর্ণের হয়। | মাটির নীচের স্তরে খনিজ মৌলের সমৃদ্ধি ঘটে তাই এই স্তরের রং গাঢ় হয়। |
ফলাফল | খনিজ মৌলের অপসারণ ঘটে এর ফলে ওপরের স্তরের খনিজ হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। | নীচের স্তরে দ্রবীভূত খনিজের সমৃদ্ধি ঘটে ফলে B স্তরটি খনিজের স্তরে পরিণত হয়। |
লিচিং বা ধৌতকরণ কাকে বলে?
বৃষ্টির জল বা জলসেচের জল যখন মৃত্তিকার বিভিন্ন অনুছিদ্রের মধ্যে দিয়ে নীচের দিকে নামতে থাকে তখন মৃত্তিকার বিভিন্ন পদার্থ সমূহ দ্রবীভূত অবস্থায় উপরের স্তর থেকে নীচের স্তরে গিয়ে সঞ্চিত হয়, একে লিচিং বা ধৌতকরণ বলে। এর ফলে মৃত্তিকার উপরি স্তর থেকে গাছের খাদ্য উপাদান গুলি নিচের স্তরে চলে যাওয়ায় উপরের স্তরটি অনুর্বর হয়ে যায়।
ড্যুরিক্রাস্ট কী?
ভূপৃষ্ঠের অল্প নীচে ভ্রাম্যমান অ্যালুমিনিয়াম, লোহা, সিলিকা ও চুনের স্থানীয় কেন্দ্রীভবনের ফলে উৎপন্ন এক কঠিন ত্বকবিশেষ। রাসায়নিক সংযুক্তির পার্থক্য অনুযায়ী তাদের কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যেমন – বক্সাইট (অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড সমৃদ্ধ), ল্যাটেরাইট বা ফেরিক্রিট (লৌহ-অক্সাইড সমৃদ্ধ), সিলক্রিট (সিলিকা সমৃদ্ধ), ক্যালক্রিট বা ক্যালিচি(চুনসমৃদ্ধ)। সাধারণত মৃত্তিকা পরিলেখ-এর Bহরাইজনে এই স্তর গঠিত হয়।