মধ্যপ্রাচ্যে ও ভারতে খনিজ তেলের বন্টন এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য এগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এগুলি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো। তোমরা তোমাদের প্রয়োজনীয় প্রশ্ন কমেন্ট করে জানাতে পারো।
মধ্যপ্রাচ্যে খনিজ তেলের বন্টন:
মধ্যপ্রাচ্য পৃথিবীর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ তেল বলয়। এখানে পৃথিবীর 60% তেল সঞ্চিত আছে এবং প্রায় 25% তেল উত্তোলিত হয়। এই অঞ্চল সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল –
1. সৌদি আরব:
মধ্যপ্রাচ্যে খনিজ তেল উত্তোলনে এটি প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সৌদি আরবের আবকাইক, কাতিফ, খাওয়ায়, সাফানিয়া, মনিফা, আইনডার প্রভৃতি অঞ্চলে তেল উত্তোলিত হয়। মোট 59.60 কোটি মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।
2. ইরান:
তৈল উত্তোলনে এটি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। মসজিদি সুলেমান, পাজানাম, আঘাজারি, লালি প্রভৃতি অঞ্চলে তেল উত্তোলিত হয়। মোট 18.60 কোটি মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।
3. ইরাক:
খনিজ তেল উত্তোলনে এটি তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। কিরকুক, আইনজালে, জুবেইর, মসুল অঞ্চলে খনিজ তেল উত্তোলিত হয়। মোট 19.30 কোটি মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।
4. কুয়েত:
খনিজ তেল উত্তোলনে এটি চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। বুরগান, মিনাগিস, সাবরিয়া অঞ্চলে খনিজ তেল উত্তোলিত হয়। মোট 16.40 কোটি মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।
5. সংযুক্ত আরব আমিরশাহি:
খনিজ তেল উত্তোলনে এটি পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে। মুররান, আবুধাবি, দুবাই প্রভৃতি অঞ্চলে তেল উত্তোলিত হয়।
6. কাতার:
খনিজ তেল উত্তোলনে এটি ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে। জেবেনদুখান, শারখি, ঈদওল প্রভৃতি অঞ্চলে খনিজ তেল উত্তোলিত হয়।
7. অন্যান্য:
এছাড়া বাহারিন, লিবিয়া, মিশর, ওমান, নাইজেরিয়া প্রভৃতি অঞ্চলেও খনিজ তেল উত্তোলিত হয়।
ভারতে খনিজ তেলের বন্টন:
খনিজ তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের যোগদান অতি নগন্য। দেশের খনিগুলি থেকে মোট ব্যবহারের মাত্র ⅓ অংশ উত্তোলিত হয়।
1867 সালে অসমের মাকুম নামক স্থানে ভারতের প্রথম খনিজ তেলের খনিটি আবিষ্কৃত হয়। স্বাধীনতার পর ONGC রাশিয়ার বিষেষজ্ঞদের সহায়তায় ভারতের নানা স্থানে তৈলখনি আবিষ্কৃত হয়েছে এবং হচ্ছে। বর্তমানে ভারতের চারটি অঞ্চল থেকে খনিজ তেল উত্তোলন করা হয়। নীচে অঞ্চলগুলির সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
1. মুম্বাই দরিয়া:
এটি ভারতে খনিজ তেল উত্তোলনে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। মুম্বাই হাই থেকে সাগর বিকাশ ও সাগর সম্রাট নামক দুটি ভাসমান জাহাজ থেকে খনিজ তেল উত্তোলন করা হয় – হীরা, পান্না, রত্না, দমন, দরিয়া, গান্ধার। মোট 1.62 কোটি মেট্রিক টন খনিজ তেল উত্তোলিত হয়।
2. রাজস্থান:
খনিজ তেল উত্তোলনে এটি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। আরাবল্লী পর্বতের পশ্চিম অংশ থেকে তেল উত্তোলন করা হয়। মোট 87.83 লক্ষ মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।
3. গুজরাট:
এটি তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। আঙ্কেলেশ্বর, ওসাম্বা, লুনেজ, ঢোলকা, নওয়াগ্ৰাম, সানন্দে প্রভৃতি অঞ্চল থেকে তেল উত্তোলন করা হয়। মোট 50.50 লক্ষ মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।
4. অসম:
এটি চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। নাহারকাটিয়া, হুগরীজান, ডিব্রুগড়, ডিগবয়, মাকুম, মোরান, শিবসাগর, বদরপুর প্রভৃতি অঞ্চল থেকে তেল উত্তোলন করা হয়। মোট 44.66 লক্ষ মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।
এছাড়া করমন্ডল উপকূলের তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ প্রভৃতি অঞ্চল থেকেও প্রায় 4.96 লক্ষ মেট্রিক টন তেল উত্তোলিত হয়।