পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক উন্নতিতে কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব লেখ। কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব হ্রাসের কারণ গুলি লেখ।

পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক উন্নতিতে কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব এবং কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব হ্রাসের কারণগুলি এই লেখাটিতে আলোচনা করা হল। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আশা করি এটি তোমাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে। তোমরা নিজেরা মনোযোগ সহকারে পড়ো এবং প্রশ্নগুলো তোমাদের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করো।

কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব:

পশ্চিমবঙ্গের কৃষি শিল্প পরিবহন ব্যবসা বাণিজ্য ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কলকাতা বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম। নিচে গুরুত্বগুলি আলোচনা করা হল –

কৃষি উন্নয়ন:

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কৃষিজ দ্রব্য যেমন চাল চা তৈল বীজপাড়া দ্রব্য লাক্ষা প্রভৃতি কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি হওয়ায় কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতি অব্যাহত থাকে।

শিল্প উন্নয়ন:

শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যন্ত্রপাতি আমদানি ও শিল্পজাত দ্রব্য রপ্তানির মাধ্যমে কলকাতা বন্দর পশ্চিমবঙ্গের শিল্প উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

কর্মসংস্থান বৃদ্ধি:

কলকাতা বন্দরে ও বন্দরকে ভিত্তি করে বিকশিত বিভিন্ন শিল্প কারখানায় পরিবহন মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।

পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি:

কলকাতা বন্দরের আমদানি রপ্তানি দ্রব্য পরিবহনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের সড়কপথ, রেলপথ ও জলপথের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন:

চা, পাটজাত দ্রব্য প্রভৃতি কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে ভারত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।

অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের প্রসার:

কলকাতা বন্দর থেকে ভারতের অন্যান্য বন্দরে জাহাজ চলাচল করে ফলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতি ঘটেছে।

কলকাতা বন্দর এর গুরুত্ব হ্রাসের কারণ:

কলকাতা একসময় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের শ্রেষ্ঠ বন্দর ছিল। বর্তমানে এই বন্দরে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে যা বন্দরটির গুরুত্ব হ্রাস করেছে। সমস্যাগুলি হল –

হুগলি নদীর নব্যতা হ্রাস:

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি নদীর নিম্ন প্রবাহ দেখা যায়। ফলে প্রচুর পরিমাণে বালিকাদা পল্লী নদী পক্ষে সঞ্চিত হওয়ায় নদীর গভীরতা হ্রাস পেয়েছে ফলে সমুদ্রগামী জাহাজ কলকাতা বন্দরে আসতে পারে না।

অসংখ্য নদী বাঁক:

মোহনা থেকে কলকাতা বন্দর পর্যন্ত হুগলি নদীতে অসংখ্য নদী বাঁক রয়েছে যা জাহাজ চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায়।

অসংখ্য বালুচর:

মোহনা থেকে কলকাতা বন্দর পর্যন্ত হুগলি নদীতে ১৫ টি বালুচর রয়েছে ফলে বিদেশী জাহাজ গুলি পথপ্রদর্শক জাহাজ ছাড়া কলকাতা বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না।

বন্দরের স্থানাভাব:

কলকাতা বন্দরের স্থানা ভবের জন্য একসঙ্গে বেশি জাহাজ গ্রহণ করতে পারে না আবার যেটি কম থাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য বোঝায় বা খালাস কোনটাই করা যায় না।

পশ্চাৎভূমির আয়তন হ্রাস:

পরিসর পারাদ্বীপ বন্দর স্থাপনের ফলে কলকাতা বন্দরের পশ্চাৎ ভূমি হ্রাস পেয়েছে, ফলে বেশি সংখ্যায় জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না।

অধিক শুল্কহার:

ভারতের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় কলকাতা বন্দরের শুল্কহার বেশি ফলে বহুবিদেশি জাহাজ এখানে পণ্য বোঝাই বা খালাস করতে চায় না।

রপ্তানি পণ্যের চাহিদা হ্রাস:

কলকাতা বন্দর দিয়ে প্রচুর পাট রপ্তানি করা হতো। বর্তমানে পা যত দ্রব্যের চাহিদার হ্রাস পাওয়ার কলকাতা বন্দরের রপ্তানির বর্ণের পরিমান কমেছে।

নদীতে ঘন ঘন বান:

হুগলি নদীতে মাঝে মাঝে প্রবল বার হয় যা অপেক্ষমান জাহাজের ক্ষতি করে তাই বেশি সংখ্যক জাহাজ এখানে অপেক্ষা করতে চাই না।

ব্যয়বহুল:

পলি সরানোর জন্য নদী বক্ষে নিয়মিত ড্রেজিং এবং পথপ্রদর্শক জাহাজের ব্যবস্থা করতে প্রচুর পরিমাণে অর্থ ব্যয় হয়।

FAQ/বহুচর্চিত প্রশ্নাবলী

কলকাতা বন্দরের সহায়ক বন্দর কাকে বলে?

হলদিয়া বন্দরকে কলকাতা বন্দরের সহায়ক বন্দর বলে।

কলকাতা বন্দরের প্রধান সমস্যা কী?

কলকাতা বন্দরের প্রধান সমস্যা হুগলি নদীর নাব্যতা হ্রাস।

নমস্কার , আমরা দেবলীনা ও শুভদীপ । আমি ওয়েবসাইটের লেখক, আমি ভূগোলে স্নাতক করেছি। আমার উদ্দেশ্য শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়ের জন্য ভূগোলের গুণমান নোট এবং উপাদান শেয়ার করা এবং আমার দিক থেকে সর্বোপরি সাথে থাকা।

Leave a Comment

error: Content is protected !!